প্রবাসফেরত আনোয়ারের বাগানে থোকায় থোকায় আঙুর
সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত মাচা। তার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। দিন বিশেক পর পেকে উঠলে এই আঙুর সংগ্রহ করা হবে বাগান থেকে। আঙুর বাগানের এমন দৃশ্য দেখা গেল দেবিদ্বার উপজেলার মরিচা গ্রামে। ওই গ্রামের সৌদিফেরত আনোয়ার হোসেন সরকার আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বাগানটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করছে প্রতিদিনই।
স্থানীয়ারা জানায়, মো. আনোয়ার হোসেন সরকার সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যতিক্রম ফসলের চাষ করেছেন। এবার তিনি মনোযোগী হয়েছেন আঙুর চাষে। ১৫ মাস আগে দুই বিঘা জমিতে আঙুর চাষ করেন। চারা এনেছেন ঝিনাইদহ থেকে।
দলাহাস গ্রামে সড়কের পাশে উঁচু জমি। সেখানে বাঁশ ও সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাচা করা হয়েছে। মাচায় লতানো আঙুর গাছ। হালকা বাতাসে দুলছে আঙুর। প্রতিটি থোকায় ৫০ থেকে ১০০ করে আঙুর ফল রয়েছে।
আনোয়ার হোসেন সরকার জানান, বাগানে তাঁর ছয় লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রথমবারেই বাগানে ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন সামনের বছর এই ফলন আরও বাড়বে। একই গাছ থেকে ২০-২৫ বছর ফল আসবে বলেও জানান তিনি। আরও তিন বিঘা জমিতে আগামীতে আঙুর চাষ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে আঙুর নিয়ে আনোয়ারের শুরুটা ভালো ছিল না। প্রথম প্রথম এলাকার লোকজন হাসিঠাট্টা করত। বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছে আঙুর চাষে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় বলেন, ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশে ৬০ শতাংশ জমিতে আঙুর বাগান করেছেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। আমরা বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পরিপক্ক হতে আরো ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে। ফলন বা বাণিজ্যিক সফলতা-ব্যর্থতা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা পরামর্শ দিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করছি।
শুধু দেবিদ্বার নয়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলারামপুর গ্রামেও আঙুর চাষ করা হয়েছে। সেখানেও বাগানে থোকায় থোকায় আঙুর ঝুলে রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, আঙুর মূলত ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভালো হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আঙুর বিচ্ছিন্নভাবে চাষ হচ্ছে। তবে কুমিল্লায় যারা আঙুর চাষ করেছেন তাদের ফল সংগ্রহের পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব। তারা কেমন সফল হয়েছেন।