তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তির বহুল ব্যবহারের ফলে সরকারি কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৭ মে) ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ১৭ মে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। রূপকল্প-২০২১ ঘোষণার পর টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কারণে দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে বিরাট জাগরণ তৈরি হয়েছে, যার সুফল বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে পেতে শুরু করেছে।”
সরকারপ্রধান বলেন, “সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উত্তরণের ক্ষেত্রে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় এসেছে ৫জি প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি। আর এগুলোকে জনকল্যাণে ব্যবহার করাই হচ্ছে পরবর্তী চ্যালেঞ্জ। এ পরিপ্রেক্ষিতে দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণকে দেওয়া নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে। যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রায়োগিক উৎকর্ষ সাধন এবং এর ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এ খাতের সুষ্ঠু বিকাশে প্রণয়ন করা হয়েছে আইসিটি নীতিমালা, আইসিটি আইন, তথ্য নিরাপত্তা গাইডলাইন ও তথ্য অধিকার আইন।”
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা টেলিযোগাযোগ খাতের সব সেবা আধুনিক ও যুগোপযোগী করেছি। ইন্টারনেট ডেনসিটি ও সাবমেরিন ক্যাবলের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে নতুন সাবমেরিন ক্যাবল। আমরা ফোর-জি প্রযুক্তি চালু করেছি। ফাইভ-জি প্রযুক্তির টেলিযোগাযোগ সেবা চালু করার প্রস্তুতি চলছে। দেশের প্রায় শতভাগ এলাকা এখন মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। জনগণ ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র, উপজেলা ই-সেন্টার এবং জেলা ই-সেবা কেন্দ্র ছাড়াও মোবাইল ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা গ্রহণ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি স্থাপন করেছি। এর ফলে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন গ্রোথ সেন্টারগুলো, অর্থাৎ প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় চক্ষু ও টেলিমেডিসিন সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। করোনার ভয়াবহতম সময়ে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। এ ছাড়া ভিডিও কনফারেন্সিং চালু থাকার ফলে খুব অল্প সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং সরকারি দিকনির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে পদার্পণ করেছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা ঘরে তুলতে এবং জনগণের জন্য বিশ্বমানের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিশ্চিত করতে আমি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই। আসুন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ তথা উন্নততর তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ পরিণত করি।”
‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।