গাছ বিক্রির অভিযোগে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ তিনজন বরখাস্ত
গাছ বিক্রির অভিযোগে বান্দরবানের লামায় বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তাসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১৭ মে) বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক।
বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন–তৈন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খান জুলফিকার আলী, বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও বাগান মালি অলক কুমার সেন।
বন বিভাগ জানায়, ১৯৮৬-১৯৮৭ অর্থবছরে মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘেঁষা কাঁকড়াঝিরি এলাকার খাস জমিতে সেগুনসহ অন্যান্য প্রজাতির বনজ গাছ লাগানো হয়। পরে ১৯৯৬-১৯৯৭ অর্থবছরে ওই এলাকার ফাঁকা স্থানে একই প্রজাতির আরও বনজ গাছ রোপণ করে বন বিভাগ। ১০ বছরের ব্যবধানে প্রথম ধাপে ৬০০ একর ও পরবর্তী ধাপে ৪৫০ একর খাস ভূমিতে বাগান করা হয়, যা লামা বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের আওতাভুক্ত।
চলতি বছরের এপ্রিলে কাঁকড়াঝিরি এলাকার সেগুনসহ অন্যান্য প্রজাতির মূল্যবান গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লামার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরিফুল হক বেলাল। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই দিনই বাগানের মালিকে বরখাস্ত করেন তিনি। একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠ বন কর্মকর্তা হাবিব উল্লাহকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা খান জুলফিকার আলী বলেন, গাছ কাটা ও পাচারের বিষয়ে বিট কর্মকর্তা ও বাগান মালি কিছু অবগত করেননি। এ ছাড়া সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত কোনো নোটিশও তিনি পাননি।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল বলেন, ‘বন আইনের ৪ ও ৬ ধারায় ঘোষিত খাস ভূমিতে বন বিভাগের সেগুনসহ অন্যান্য মূল্যবান বিভিন্ন প্রজাতির ১৮৭টি গাছ কাটা হয়েছে। কেটে নেওয়া গাছগুলো থেকে গড়ে ১০ ঘনফুটের বেশি কাঠ ধরা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত দুই-তৃতীয়াংশ কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে।’
আরিফুল হক বেলাল বলেন, ‘এ ঘটনায় ছয়টি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া গাছ বিক্রিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেটে নেওয়া গাছগুলোর বাকি কাঠ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’