বেনজীর আহমেদের সম্পত্তির ক্রোক প্রক্রিয়া শুরু : দুদক আইনজীবী
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার বিষয়ে আদালত যে আদেশ দিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
আজ রোববার (২৬ মে) দুপুরে সুপ্রিমকোর্টে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, মেয়ে ও কয়েকজন স্বজনের সম্পত্তি ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেন। সেই আদেশ দেওয়ার পর থেকেই বেনজীর আহমেদের ২৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ আর্থিক লেনদেনকারী মোট ৩৩টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে তিনি ব্যাংক থেকে আর কোনো লেনদেন করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে তার সব ক্রোক করা সম্পত্তি জব্দ হিসেবেই থাকবে।’
গত ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে তার (বেনজীর) বিষয়ে একই অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছে।
সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দাবি করা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের (র্যাব) সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় সাবেক এ পুলিশ প্রধান।
‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদন তার অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। এ ছাড়া পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।