ফরিদপুরে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরের বোয়ালামারী উপজেলায় ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে রাসেল সিকদার (২৩) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলের দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩০২ ধারায় আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রাসেল সিকদার বোয়ালমারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার সিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে পুলিশ তাকে জেলহাজতে পাঠায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশুটি আসামি রাসেল সিকদারের প্রতিবেশী চাচাতো বোন। শিশুটি তখন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শিশুটির মায়ের বাড়ির পাশে রাস্তায় মুদি দোকান রয়েছে। দোকানে রাসেলের কিছু টাকা বাকি ছিল। ঘটনার দিন ২০২২ সালের ২২ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি শিশুটিকে বাড়ি থেকে পাওনা দেড়শ টাকা নিয়ে আসতে বলেন। তিনি তখন বাড়িতে একাই ছিলেন। শিশুটি তাঁর বাড়িতে টাকা আনতে গেলে পাশের গোসল খানায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে ধর্ষণ পরে ঘটনা জানাজানির ভয়ে হাত-পা বেঁধে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন।
শিশুটির পরিবার তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মসজিদে মাইকিং করতে থাকে এবং ৯৯৯ কল করে পুলিশকে জানায়। তিনি তখন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি মতে গোসলখানার ভেরত থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে পরের দিন বোয়ালমারী থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন।
বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক মো. আজাদ হোসেন ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এই হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে আমরা খুশি। এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
নিহত শিশুর বাবা বলেন, ‘আমরা এলাকায় নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এ রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমরা সন্তুষ্ট হব না।