স্বপ্নবাজ ভিক্ষুকের নিজের তৈরি দোতলা বাড়ি
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি গ্রামে রহমত আলী ওরফে নমেন আলী একজন ভিক্ষুক। তাঁর স্বপ্ন, একটি দোতলা বাড়ি করবেন। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি ভিক্ষা করে নিজের আহার জোগাড়ের পাশাপাশি শুরু করেন একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণকাজ। বাড়ির কাজ শেষ করে তিনি এখন সেখানে বসবাস করছেন।
দামুড়হুদার ডুগডুগি গ্রামে প্রধান সড়কের পাশে সরকারি জমিতে ২০ বছর আগে নমেন আলী শুরু করেন এই বাড়ির নির্মাণকাজ। সারা দিন ভিক্ষা করার পাশাপাশি তিনি ইট বালি ও সিমেন্ট জোগাড় করে ধীরে ধীরে বাড়িটি গড়ে তুলতে থাকেন। ইতোমধ্যে দ্বিতল ভবনের কাজ শেষ করেছেন তিনি। দোতলায় দুটি কক্ষ ও নিচতলায় একটি কক্ষ নিয়ে তাঁর এই দোতলা বাড়ি।
ভিক্ষুক রহমত আলী ওরফে নমেন আলী (৫৮) দামুড়হুদার কাদিপুর গ্রামের কিয়ামউদ্দিনের ছেলে। তিনি প্রতিবন্ধী হওয়ায় পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেন। আগে থেকেই তার স্বপ্ন ছিল একটি দোতলা বাড়ির। যে বাড়িতে তিনি আরাম আয়েশে থাকবেন। স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি নিজ হাতে নিজের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। পুরো দোতলা বাড়িটি তিনি একাই নির্মাণ করেছেন।
সরকারি জমিতে বাড়ি হওয়ায় ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। বাড়ি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। ভিক্ষুক এবং এলাকাবাসীর অনুরোধে প্রশাসনকে ফিরে যেতে হয়েছে।
নমেন আলীর বাড়িটি কেউ দেখতে চাইলে তিনি বাড়ির নিচতলা দেখতে দেন। কাউকে দোতলায় উঠতে দেন না। দোতলা নিয়ে তাই এলাকাবাসীসহ সবার রয়েছে কৌতূহল। কী আছে দোতলায়।
নমেন আলীকে মাঝেমধ্যে বাড়ির দোতলায় উঠে বসে থাকতে দেখা যায়। চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের পাশে বাড়িটি হওয়ায় আগ্রহী অনেকে আসেন বাড়িটি দেখতে।
দামুড়হুদার হাউলি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন বলেন, ভিক্ষুক রহমত আলী ওরফে নমেন আলী প্রায় ৩০ বছর আগে এখানে একটি ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেন। ২০০০ সালের দিকে তিনি কাদা-মাটি ও ইট দিয়ে একটি পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে একইভাবে ইট কুঁড়িয়ে, সামান্য কিছু সিমেন্ট কিনে নিজ হাতে দোতলার কাজ শুরু করেন। প্রায় ২০ বছর ধরে তিলে তিলে সম্প্রতি সিঁড়িসহ দোতালার কাজ শেষ করে এখানে বসবাস করছেন।বাড়ির নিচতলায় লাগিয়েছেন দামি টাইলসও।