ডিবি পুলিশের ওপর হামলা, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সহসভাপতি গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সরকারি কাজে বাধা এবং গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওপর হামলা, মারপিট ও আহত করার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সহসভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বোয়ালমারী পৌর সদরের নাট মন্দির সংলগ্ন স্টেশন রোডে ডিবি পুলিশের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মুর্তজা তমাল (৩২) এবং সহসভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম রনি (২৮)। তাঁরা দুজন বোয়ালমারী উপজেলা সদরের কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতি রোববারে বোয়ালমারীতে হাট বসে। ভাঙা-চোরা রাস্তা ও হাটের কারণে নাট মন্দির সংলগ্ন স্টেশন রোডে প্রচুর যানজট ছিল। ওই যানজটের মধ্যে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি গাড়ি যাচ্ছিল। এ সময় তাদের শরীরের পুলিশের পোশাক ছিল না। ওই গাড়ির পেছনে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। যানজটের কারণে ডিবির গাড়ি সামনের দিকে এগোতে পারছিল না। কিন্তু পেছন থেকে ছাত্রলীগনেতাদের বহনকারী মোটরসাইকেল থেকে বার বার হর্ন বাজানো হচ্ছিল। এ অবস্থায় ডিবি পুলিশের গাড়ি থেকে এক কনস্টেবল নেমে ওই দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে বলেন, দেখছেন না যানজটের কারণে গাড়ি সামনে এগোতে পারছে না। আপনারা বার বার হর্ন দিচ্ছেন কেন? এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতারা আজেবাজে মন্তব্য করেন এবং ডিবির ওই কনস্টেবলকে গালাগালি ও পর মারপিট করেন।
ডিবি পুলিশের আহত ওই কনস্টেবলের নাম মির্জা গোলাম গাউস। তাঁকে আহত অবস্থায় ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ডিবিপুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নান বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় গতকাল রাতে একটি মামলা করেন। পরে রাতেই বোয়ালমারী থেকে ওই দুই ছাত্রলীগনেতাকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের জেলার সভাপতি আসছিলেন। ডিবির গাড়ি ও যানজটের কারণে একটু দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। সভাপতি ছাত্রলীগের যোগ্য অভিভাবক। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। ভুল বোঝাবুঝির এ ঘটনায় মামলা হলে ছাত্রসমাজের কাছে ভুল তথ্য যাবে।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পুলিশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বিষয়টি মিটে যাবে।’
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. হান্নান বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলাটি করেছেন।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের ওসি এম এ মতিন বলেন, সরকারি কাজে বাধা এবং ডিবি পুলিশের ওপর হামলা, মারপিট ও আহত করার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।