ঈদের দিনে ঢাকা মেডিকেলে ১০৫ রোগীই ‘মৌসুমি কসাই’
সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আজ সোমবার (১৭ জুন) সকাল থেকেই ধর্মীয় রীতিতে পশু কোরবানি দিচ্ছেন মুসল্লিরা। কোরবানির এই সময়ে অনেকেই মৌসুমি কসাই হিসেবে কাজ করছে। এতে ঘটছে নানারকম দুর্ঘটনা। রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আজ দুপুর পর্যন্ত জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন ১১৫ জন। তাদের মধ্যে ১০৫ জনই মৌসুমি কসাই।
দুপুরে ঢামেকে গিয়ে দেখা গেছে, কারও কেটেছে হাত, কারও পা। কারও আবার গরুর আঘাতে হাত-পা ভেঙেছে।
এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপের সময় ঢামেকের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অরিফ হোসেন জানান, সকাল থেকে ঢামাকের জরুরি বিভাগে যারা এসেছন, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই কোরবানির পশু জবাই করতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
ডা. অরিফ হোসেন বলেন, ‘আমার ধারণা, সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০০ থেকে ২৫০ জন মৌসুমি কসাই গরু জবাইসহ কাটাকাটি করতে গিয়ে আহত হয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসবেন। কয়েকজনকে দেখলাম গরুর গুতা খেয়ে এসেছেন। হাত-পাও ভেঙেছে অনেকের।’
ডা. অরিফ হোসেন বলেন, ‘বিকেলের দিকে কমে যাবে রোগীর সংখ্যা। এখানে মোট ছয়জন ডাক্তার নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ ছাড়া আমরা দুজন রাউন্ডে যাচ্ছি। আর নার্স রয়েছে অনেকজন। চিকিৎকের কোনো সঙ্কট নেই। এ ধরনের রোগী এ সময় বেশি আসে বলে আমরা সেভাবেই চিকিৎসক বেশি রেখেছি।’
জরুরি বিভাগে আসা অনেকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের মধ্যে রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সবুজ হোসেন (৩৫) বলেন, ‘গরু কাটা প্রায় শেষ। দা দিয়ে কোপ দিয়েছি হাড়ে। হঠাৎ হাত থেকে দা সরে স্লিপ করেই পায়ের ওপর এসে পড়েছে। বেঁচে যে আছি সেটাই সৌভাগ্য। তবে, খারাপ লাগছে না একদমই। আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজ করতে গিয়ে জখম হয়েছি, আল্লাহই সব ঠিক করে দেবেন।’
কলাবাগান থেকে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রশিদ আলম বলেন, ‘গরুর মাংস কাটতে গিয়ে আঙুল কেটে পড়ে গেছে। কখনও এসব করা হয় না বলে এমন ঝামেলা হয়েছে। তাই দেরি না করে দ্রুতই চলে এলাম হাসপাতালে।’
রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে চিকিৎসা নিতে গিয়েছেন নাজমুল আলম। গরুর লাথিতে তার পা ভেঙেছে। তিনি বলেন, ‘গরু জবাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম আমরা। এমন সময় খুব জোরে গরু লাথি মারে। এতে আমার পা ভেঙেছে।’