যৌতুকের জন্য স্ত্রীর শরীরে আগুন, দুই জা ও ভাসুর আটক
কুমিল্লায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে দুই সন্তানের জননী নূরজাহান বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূর আগুনে পুড়িয়ে আহত করেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁর শরীরে খুন্তির ছ্যাকার দাগ রয়েছে। বুধবার রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার শিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত নূরজাহান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনার পর স্বামী খোরশেদ আলম (৪৫) সহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বাবা জয়নাল আবেদীন।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে ওই নারীর ভাসুর আলী আশ্রাফ, দুই জা শাহীনুর বেগম ও লাইনি বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
থানায় দায়ের করা মামলার কাগজপত্র থেকে জানা যায়, বুধবার রাতে যৌতুকের টাকার জন্য নূরজাহানের সাথে তার স্বামীর বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় স্বামী খোরশেদের সাথে তার ভাই ও ভাইয়ের বউয়েরা মিলে নূরজাহানকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আগুন লাগিয়ে দেয়৷ একপর্যায়ে নূরজাহানকে গরম খুন্তি দিয়ে গোপনাঙ্গ ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছ্যাকা দেয় তারা। সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নূরজাহানের বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে হুমকিধমকি দিয়ে আসছিল। আমি এর আগে কয়েকবার তাদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করি। কিন্তু তারা এই সমাধান না মেনে আমার মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে আহত করল। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে। স্বামীসহ তিনজন পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।