চালক-হেলপার অপহরণ : এসআইসহ পাঁচজনের ২১ বছরের কারাদণ্ড
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ২৫২ বস্তা পেঁয়াজ লুট, ট্রাকের চালক ও হেলপারকে অপহরণ এবং চাঁদা দাবি মামলায় এক এসআইসহ পাঁচজনকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুটি ধারায় প্রত্যককে ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম আলী আহমেদ এ রায় দেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রহমান ও স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—জেলার কাজীপুর উপজেলার নাটুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল হাসান ও সলঙ্গা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মতিউর রহমান খান, সলঙ্গা থানার পাটধারী গ্রামের রেজাউল করিম ওরফে রনি, হাসানপুর গ্রামের সবুজ আলী ও বাগুন্দা গ্রামের চালক আনিস।
এ ছাড়া সদর উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের সাব্বির আলম ওরফে সবুজকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাব্বির আলম ছাড়া বাকিরা পলাতক রয়েছেন। মামলার অপর অভিযুক্ত মিন্টু ও মনসুর আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনা মসজিদ বন্দর থেকে ২৫২ বস্তা ভারতীয় পেঁয়াজ একটি ট্রাকে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয় চালক মো. মোরশেদ আলী ও হেলপার রবিউল। ট্রাকটি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার র্যাব-১২ এর কার্যালয়ের সামনে এলে পুলিশ পরিচয়ে চালক ও হেলপারকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করা হয়। পরে চালক ও হেলপারকে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে ট্রাকের মালিকের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় ট্রাকের মালিক মজিবুর রহমান সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার নাটুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মাইনুল হাসান, সলঙ্গা থানার এএসআই মতিউর রহমান খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলা চলাকালে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার আদালত পাঁচজনকে ৩৬৫ ধারায় সাত বছর এবং ৩৯২ ধারায় ১৪ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ ছাড়া আসামি সাব্বির আলম ওরফে সবুজকে দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।