কামড় দেওয়া রাসেলস ভাইপার নিয়েই হাসপাতালে কৃষক মমিন
সাপ থেকে বাঁচতে বাড়ির চার দিকে জাল দিয়ে বেড়া দেওয়ার সময় সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন কৃষক মমিন শেখ। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মার চরাঞ্চল চরজানাজাতে।
এরপর কৃষক মমিন শেখ ও তাঁর ছেলে মিলে রাসেল ভাইপার সাপটিকে মেরে শিবচর হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি হয়েছেন। একই রাতে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক যুবককে বিষধর সাপে দংশন করে। পুলিশের সহযোগিতায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হলে এন্টিভেনম দেওয়ার পর এখন সুস্থ রয়েছেন। এর আগে গত সপ্তাহে একই ইউনিয়নের আরেক কৃষক সুলতান ব্যাপারী সাপের দংশনের পর হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেন।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে শিবচরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চল চরজানাজাত ইউনিয়নে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। তাই ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের আজিজ শেখের ছেলে মমিন শেখ বাড়ির চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনি ওই বেড়া তল্লাশির সময় হাতে আঘাত অনুভব করেন। এরপর তিনি সামনে একটি সাপ দেখতে পান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হাতে বাঁধ দেন। তারপর ছেলেকে নিয়ে সাপটি মেরে ফেলেন। সাপটিকে নিয়ে তিনি শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। চিকিৎসকরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
অপরদিকে একই রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের চর শেখপুর গ্রামের সজিব হাওলাদার স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তার পাশ থেকে তাকে একটি কিছুতে কামড় দিলে তিনি বুঝতে না পেরে বাড়ি চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পর তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান তিনি। পরে এলাকায় টহলরত পুলিশের সহায়তায় তাকে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাকে এন্টিভেনম দেন। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন।
মমিন শেখ বলেন, ‘চরে সাপের উপদ্রব এবার অনেক বেশি, তাই বাড়ির চারদিকে বেড়া দিচ্ছিলাম। এ সময় সাপে কাটে। পরে হাতে বাঁধ দিয়ে সাপটিকে মেরে হাসপাতালে নিয়ে আসি। শরীরটা ব্যথা, মাথা ঘুরায়।’
সজিব হাওলাদার বলেন, কামড় দেওয়ার পর প্রথমে আমি ভেবেছিলাম হয়তো পিপড়ায় কামড় দিয়েছে। বাড়ি যাওয়ার পর আমি খুব অসুস্থ হয়ে যাই। একপর্যায়ে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এখানে আমাকে এন্টিভেনম দেওয়ার পর আমি সুস্থ আছি।’
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. প্রিন্স বলেন, মমিন শেখকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তবে রক্ত স্বাভাবিক থাকায় এখনও এন্টিভেনম দেওয়া হয়নি। রোগী সজিব হাওলাদার সম্পর্কে আবাসিক চিকিৎসক ডা. ইব্রাহিম বলেন, মধ্যরাতে ওনাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। ওনার অবস্থা খুব গুরুতর ছিল। মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছিল। রক্ত পরীক্ষা করে দ্রুত এন্টিভেনম দেওয়ার পর ওনার অবস্থা এখন ভালো।