১৫ দিনেও উন্নতি নেই বন্যার, ৩৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ
সুনামগঞ্জে ১৫ দিনেও দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। জেলার ১২ উপজেলার হাওর এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের পানি নামছে না। ফলে কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তির যেন অন্ত নেই।
স্থানীয়রা জানায়, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ির আঙিনা সর্বত্র পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলার লাখ লাখ মানুষ। কাজকর্ম না থাকায় ঠিকমতো একবেলা খাবারও জোগাড় করতে পারছে না তারা।
জেলার তিন উপজেলায় বন্যার পানি থাকায় ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম ও পাঠদান বন্ধ রয়েছে। একইভাবে জেলার বেশিভাগ উপজেলায় বন্যার পানি থাকায় ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা দুর্গত মানুষ। বন্যার পানি থাকায় জগন্নাথপুর উপজেলায়ই ৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ধর্মপাশা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জগন্নাথপুরে ১০টি, শাল্লা ও শান্তিগঞ্জে ৩টি করে এবং বিশ্বম্ভপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও বন্যা দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়ে আছে। তাই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের বাসুদেব স্মরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাউধরন গ্রামের বাসিন্দা দুদু মিয়া জানান, গত ১৫ থেকে ২০ দিনে দুইবার বন্যা হয়েছে। আর এই বন্যার কারণে রাস্তাঘাট, স্কুল সব কিছু পানির নিচে তলিয়ে আছে। এতে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। পড়াশোনা করতে পারছে না। আর এমন পরিস্থিতিতে ছেলে-মেয়েদের পড়ার জন্য জোরজবরদস্তি করা যায় না। সবখানে পানি। যেখানে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করতে হচ্ছে সেখানে পড়াশোনার কথা চিন্তাই করা যায় না
একই এলাকার অভিভাবক আরেক বলেন, ‘স্কুলে পানি থাকায় গত একটা মাস বাচ্চাকাচ্চাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বাচ্চারা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না, পড়তে পারে না। আর বাচ্চারা কী শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পানির জন্য স্কুলে আসতে পারেন না। এখন অভিভাবক হিসেবে চিন্তায় আছি এই ক্ষতি আমাদের বাচ্চারা কী করে কুলিয়ে উঠতে পারবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, ‘এখন বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানি থাকায় জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায় ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একইভাবে আরও ১৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যাদুর্গত মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় সেখানেও পাঠদান করানো যাচ্ছে না। তারপরও ১১ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পানি নামলেই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।