অবশেষে পরীক্ষামূলক চালু ইন্টারনেট, ব্যবহারে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে শুরু হয় বাংলা ব্লকেড। অচল হয়ে পড়ে দেশ। এমন অবস্থায় পুলিশি বাধায় শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এরইমধ্যে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। তাতে ফুঁসে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে নামেন অভিভাবকরাও। সরকার বলছে, এই আন্দোলনের কাঁধে ভর করে শুরু হয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। সরকারি বিভিন্ন ভবন পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ডাটা সেন্টার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিচ্ছিন্ন হয় ইন্টারনেট। যদিও বিএনপির দাবি, দেশের পরিস্থিতি আড়াল করতে বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সেবা। তবে পাঁচ দিনের মাথায় আজ মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চালু হয়েছে এই সেবা।
গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট সেবা। এ নিয়ে জনমনে দেখা দেয় নানা প্রশ্ন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে এই সেবা বন্ধকে ঘিরে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। ব্যবসায়িক মহলের অনেকের মতে এতে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কারণ, ইন্টারনেট সেবা চালু না থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে দেশের রপ্তানিমুখী ব্যবসা পড়েছে হুমকির মুখে।
এদিকে, ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফ্রিলান্সার। তথ্য আদান প্রদানে বাধাগ্রস্ত কূটনীতিক পাড়াও। গণমাধ্যমও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে বিপত্তির মুখে পড়েছে।
এসব বিষয়ে আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে কথা বলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। বিকেলে তিনি জানিয়েছিলেন, আজ রাতের মধ্যেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চালু হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। তিনি বলেছেন, যে আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি, জামায়াত, শিবির জ্বালাও-পোড়াও করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। তাদের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। যদিও এ সময়ে তারা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ডাটা সেন্টার পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট সেবা। তারপর থেকেই এই পরিষেবা চালু করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যাংক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, কূটনীতি পাড়া, বৈদেশিক মুদ্রা আদানপ্রদান সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, আইটি, ফ্রিলান্সারসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেতে জনগণ ও গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়। তাই মূলধারার গণমাধ্যমকে প্রধান্য দিয়ে তথ্য বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের পরামর্শ দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পেইড এজেন্টরা দেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ায়। তাই যে কোনো তথ্যে আবেগ তাড়িত না হয়ে মূলধারার গণমাধ্যমকে ফলো করার অনুরোধ করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষেই ছিলেন জানিয়ে পলক বলেন, আমরা সবার সহযোগিতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আনতে চাই।