কক্সবাজারে থেকেও সাভারে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় আসামি ড্যাফোডিল শিক্ষার্থী
বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন কক্সবাজারে। ছিলেন না কোটাবিরোধী কোনো আন্দোলনে। তার পরও সাভারে গাড়ি পোড়ানোর মামলার আসামি হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এস এম মাশফিকুর রহমান প্রান্ত (২২)। তিনি বিবিএ চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে প্রান্তর নাম অন্তর্ভুক্ত করায় বিস্ময়ে হতবাক এই শিক্ষার্থী। অহেতুক গ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ‘বাবাকে শায়েস্তা করতেই’ ছেলেকে মামলার আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ প্রান্তর বাবা ব্যবসায়ীনেতা মাকসুদুর রহমান কল্লোলের। তাঁর দাবি, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের পক্ষে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন বলেই তাঁর ছেলেকে আওয়ামী লীগের একটি অংশ মামলার আসামি করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই সাভারে বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।ওই ঘটনায় পুড়ে যাওয়া নাটোরগামী ‘আরপি রোকেয়া’ বাসের চালক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২৪ জুলাই এ মামলা করেন সাভার মডেল থানায়।
ওই মামলায় সাভার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বদিউজ্জামান বদিকে প্রধান আসামি করে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেখানে ৪০ নম্বর আসামির তালিকায় রয়েছেন শিক্ষার্থী এস এম মাশফিকুর রহমান প্রান্ত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা বাসটির গতিরোধ করে চালক ছাড়াও সুপারভাইজার ফারুক (৩২), হেলপার সাকিবকে (২১) মারধর করে বাসে আগুন ধরিয়ে দেন।
যোগাযোগ করা হলে মামলার বাদী নাটোরের গুরুদাসপুর থানার চরনালী গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৩৮) বলেন, ‘আসামিদের কাউকে আমি চিনি না। পুলিশ একটা টাইপ করা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেছে, আমি করেছি।’
প্রান্ত জানান, গত ১৬ জুলাই রাতে সেন্টমার্টিন পরিবহণে করে কক্সবাজারে যান তিনি। পরে কাউফিউতে আটকে পড়েন সেখানে। এরপর কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শ্যামলী পরিবহণে ২৩ জুলাই রাত ৯টায় কক্সবাজার থেকে রওনা দিয়ে পরের দিন ঢাকায় পৌঁছান দুপুর ১২টায়। কক্সবাজারে হোটেলের সিসি টিভি ক্যামেরা, বাসের টিকেট এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানীর করা আটকেপড়া পর্যটক তালিকায় তাঁর নাম থাকা সত্বেও তাঁর মতো নিরীহ অনেক মানুষকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাভার মহিলা পরিষদের সভাপতি পারভীন ইসলাম বলেন, এটা রাষ্ট্রীয় হয়রানি ছাড়া আর কিছুই না।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, ‘সহিংস ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা হয়েছে সাভার মডেল থানায়। এর মধ্যে কোনোটির বাদী পুলিশ কোনোটির বাদী ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। ঘটনার সময় তারা কাদের দেখেছে আর কাদের মামলার আসামি করেছে বিষয়টি তারাই ভালো বলতে পারবে।’