জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ মিছিল
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারা দেশে হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন সাংবাদিকরা। আজ শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল বের করেন সাংবাদিকরা। এ সময় ‘দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ স্লোগানে মুখর করে তোলেন প্রেসক্লাবের সমানের সমাবেশস্থল। মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। এ সময় প্রেসক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে একটি মানববন্ধন ঘিরে ‘ভুয়া, ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিতে থাকেন সাংবাদিকরা। পরে মানববন্ধন নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় সাংস্কৃতিক জোট নামক এক সংগঠন।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেন। বিএফইউজের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহিন হাসনাত ও ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘এই সমাবেশ আর সাংবাদিকদের সমাবেশ নেই। এটি সাংবাদিক ও জনতার সমাবেশে পরিণত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এরশাদের পতন হয়েছে৷ আজকে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছে। সাংবাদিক জনতা নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।’
রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘আমাদের চারজন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে, ২০০ জন আহত করা হয়েছে, ৫০ জন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। শত শত ছাত্র জনতা কাতরাচ্ছে, চোখ হারয়েছে, পা হারিয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। আর আপনি (শেখ হাসিনা) গদিতে আরামে থাকবেন। আপনার গদিতে থাকা হবে না। আপনার পতনের মধ্যে দিয়ে বিচারের ফয়সালা করব।’
সমাবেশে বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ ইচ্ছা করে গুলি করে গুলি করে নাই। হাসিনার নির্দেশে গুলি করতে হয়েছে। পুলিশ নয়, হাসিনাকে টার্গেট করুন।’
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন গতকালকেই হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার পালানোর জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিমান রেডি করে রাখা হয়েছে। আমরা বলি, আমার ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করে পালাতে পারবে না। বাংলাদেশের সকল রেলপথ, রাজপথ, সড়ক পথ, বিমান পথ, নৌপথ বন্ধ করে দিতে হবে। এই হত্যার খুনের বিচার করতে হবে। নাহলে শিশুদের কাছে আমরা অপরাধী হয়ে থাকব। দেশের কাছে আমরা অপরাধী হয়ে থাকব। এই জাতির কাছে, মানবতার কাছে অপরাধী হয়ে থাকব। সেটা আমরা হতে চাই না।’
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ, কবি আব্দুল হাই সিকদার, ডিআরইউএর সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, আমিরুল ইসলাম কাগজী, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন, ডিইউজে সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন প্রমুখ।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, সাংবাদিক নেতা সরদার ফরিদ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, আবু সালেহ আকন, জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শাহনাজ বেগম পলিসহ আরও অনেকে।
এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির ও কর্নেল (অব.) হক। ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক কারাবন্দি সাঈদ খানের স্ত্রী সাজিদা আক্তার ইতিও উপস্থিত ছিলেন।