গণ-অভ্যুত্থানের দিন নিখোঁজ, ১০ দিন পর মিলল থেঁতলানো লাশ!
৫ আগস্ট। এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। এর আগে শিক্ষার্থী-জনতার সংঘর্ষে বেশ কয়েকদিন ধরে শতশত ছাত্র, শিশু ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মারা যান পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের বিকেলেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ থানার ঝালকুড়ি এলাকার বাসা থেকে বের হন আল মামুন আমানত। তারপর আর বাসায় ফেরেননি।
তারপর থেকে অনেক স্থানে খোঁজে আমানতের পরিবার। কিন্তু, তাঁকে কোথাও খোঁজ পাওয়া যায়নি। একদিন পর, অর্থাৎ ৭ আগস্ট সকালে একটি অপরিচিত ইমো আইডি থেকে আমানতের স্ত্রী হাসিনা মমতাজের কাছে কল আসে। বলা হয়, ‘আপনার স্বামী আমাদের কাছে রয়েছে। তার মোটরসাইকেলটিও রয়েছে। এখনি ৩০ হাজার টাকা পাঠান। তারপর বলছি, আমানত কোথায় আছে।’
আমানতের খালু মো. আব্দুস ছাত্তার এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি বলেন, ‘সে সময় ৩০ হাজার টাকা পাঠান স্ত্রী মমতাজ। এরপর ওই ইমোতে কল দেওয়া ওই ব্যক্তি বলেন, আপনারা চলে আসেন ফেনি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আমানত।’
আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘এরপর আমরা দুটি গাড়ি নিয়ে রওনা দিই ফেনীর দিকে। পথের মধ্যে আরেকটি নম্বর থেকে ফোন করে আমানাতের ছেলেকে আরও সাড়ে আট হাজার টাকা পাঠাতে বলা হয়। কারণ, হিসেবে বলা হয়—হাসপাতালে জমা দিতে হবে। সে সময় ওই সাড়ে আট হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর হাসপাতালে যাওয়ার আগে তাদের নম্বর বন্ধ হয়ে যায়। পরে হাসপাতালে গিয়ে খুঁজেও আমানাতকে পাওয়া যায়নি। এরপর আমরা ফেনী সদর থানায় যাই। সে সময় পুলিশ জানিয়েছে, ওরা মূলত প্রতারকচক্র। কিন্তু, এ অবস্থার মধ্যে আমরা কারও নামে কোনো লিখিত অভিযোগ করিনি।’
আব্দুস ছাত্তার বলেন, এরপর থেকে আমি আর আমার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার পাগলের মতো সবখানে খুঁজতে থাকি। কিন্তু, কোথাও তাকে পাচ্ছিলাম না। আমার স্ত্রীর অনেক প্রিয় ছিল আমানত। সর্বশেষ আমানতের স্ত্রীসহ আমরা গতকাল যাই ঢাকা মেডিকেলে। গিয়ে সব লাশ দেখি। তারপর আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আমানতের লাশ খুঁজে পাই। আমানতের মুখ একেবারে থেতলে ছিল। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে লাশ হস্তান্তর করা হয় বলে জানান ছাত্তার।