উপদেষ্টা ও গভর্নরের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত
মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশনের একটি মামলায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তবে সে পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী এ পরোয়ানা স্থগিতের বিষয়টি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এখবর শুনে তারা গ্রেপ্তার এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সরকারি বাসভবনে আশ্রয় নেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে গত ২১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে যান অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। স্থানীয় সময় শনিবার পর্যন্ত চলে এ সভা। অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী দলে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ সাতজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্মিথ কোজেনারেশনের একটি চুক্তি করে। ১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার একতরফাভাবে চুক্তিটি বাতিল করে। চুক্তিটি বাতিলের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোর্টে ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের একটি সালিশি মামলা করে স্মিথ কোজেনারেশন কর্তৃপক্ষ। এ মামলায় একটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় অন্তর্বর্তী সরকারকে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওই আদালত দায়িত্বে থাকায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে অবশ্য আদালত তা স্থগিত করে দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ বিব্রতকর পরিস্থিতি গতকাল শনিবার রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারি এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করেছে দেশটির আদালত।
মুশফিকুল ফজল আনসারি ফেসবুকে লিখেন, ‘১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক একটি চুক্তি বাতিলের দায়ে স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি মামলা করে। ১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারের সাথে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিল সরকার। এই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট অনেকটা এখতিয়ার বহির্ভূত রায় প্রদান করে, যা শুক্রবার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়। যদিও বিষয়টির সাময়িক অবসান ঘটেছে। তবে লুটেরা সরকারের দায় রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত এই অন্তর্বর্তী সরকার নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের সে সময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে না এনে ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’