কুমিল্লায় ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি, নিহত বেড়ে ১৯ জন
ভারি বর্ষণ আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে ও ফেনীর বন্যার পানি এসে কুমিল্লায় ১৪টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে বন্যার পানিতে জেলা জুড়ে প্রায় ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত জেলাজুড়ে বন্যায় ১৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর নির্বাহী কর্মকর্তারা।
নিহতদের মধ্যে সদরে দুজন, বুড়িচংয়ে শিশুসহ চারজন, তিতাসে দুজন, নাঙ্গলকোটে তিনজন, মনোহরগঞ্জে দুজন, লাকসামে তিনজন, মুরাদনগর একজন, মনোহরগঞ্জে একজন, ব্রাহ্মণপাড়ায় একজন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২২ আগস্ট রাতে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুরিয়া গ্রামে গোমতী নদীর বাঁধ ভাঙে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় বুড়িচং উপজেলার ১০৫টি গ্রাম। বুড়িচংয়ে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলার বেশিরভাগ গ্রাম ডুবে যায়। তলিয়ে গেছে ব্রাহ্মণপাড়ার আটটি ইউনিয়ন। এছাড়া দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নসহ তিনটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ডুবেছে চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট ও বরুড়া উপজেলার বেশিরভাগ অংশ। কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নই প্লাবিত।
কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী জানান, কুমিল্লা জেলাজুড়ে ১২৫টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। জেলাজুড়ে ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত বয়স্ক ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ২০৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইয়ূব মাহমুদ বলেন, বন্যায় জেলাজুড়ে ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে। যেহেতু এখনও অনেক এলাকায় পানি ঢুকছে সেহেতু ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বন্যার পানি কমার পর সঠিক তথ্য জানা যাবে।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ বলেন, জেলাজুড়ে বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।