ভরা মৌসুমে ইলিশের ঘাটতি, দামও চড়া
ইলিশের ভরা মৌসুমেও খুলনা বাজারে নেই প্রত্যাশিত সংখ্যক ইলিশ। যা মিলছে, তার দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের আড়তে চাহিদার তুলনায় ইলিশ মাছের সংখ্যা নগন্য। দাম অনেক বেশি হওয়ায় আনাও সম্ভব হচ্ছে না।
খুলনায় ইলিশ ঘাট বলে পরিচিত চার নম্বর ঘাট এলাকায় ইলিশ ব্যবসায়ীদের কাছেও ইলিশের মজুদ খুবই কম। এই ঘাট এলাকার ইলিশ ব্যবসায়ী আবু সাঈদ। চার পুরুষ ধরে ইলিশ ব্যবসা করেন তিনি। আবু সাঈদ বলেন, ‘এবারের মতো ইলিশের আকাল আর কখনো হয়নি। আগে যেখানে তার ভাণ্ডারে প্রতিদিন সাগর ও বরিশাল এলাকা থেকে দুই-তিনশ মণ ইলিশ আসত, এবার সেখানে তিন থেকে চার মণের মতো ইলিশ আসছে। আর যেগুলো আসছে, সেগুলোর সাইজ ছোট, আবার দামও বেশি।’
নগরীর সন্ধ্যা বাজার এলাকায় দেখা যায় দাম বেড়েছে ইলিশ মাছের। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ইলিশের দাম দেড় হাজার থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকা। এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ৩০০ গ্রাম ইলিশের কেজি দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা।
গল্লামারী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আফজাল বলেন, ‘আগের তুলনায় দাম একটু বাড়তি। মূলত আড়তে নেই ইলিশ মাছ। এখন নদ-নদী-সাগরে যদি জেলেরা ইলিশ মাছ না পেয়ে থাকে, তাহলে দাম বাড়তি থাকবে। গেল এক সপ্তাহ আগেও মাছের দাম কিছুটা কম ছিল।’
বাজারে মাছ কিনতে আসা লিপি বলেন, ‘আমি এসেছিলাম কিছু ইলিশ মাছ কিনতে, কিন্তু যে দাম তাতে ইলিশ মাছ কেনা সম্ভব না। এখন তো বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই বা দেশের বাহিরে কোনো মাছ রপ্তানি হচ্ছে না। তারপরও দাম বেশি।’
খুলনা নিরালায় বাজার করতে আসা মনোজ বলেন, ‘এ বছর ছেলেমেয়েদের ইলিশ খাওয়াতে পারিনি। শুধু বাজারের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরছি।’
খুলনায় মাছ বাজারে ইলিশের এমন চিত্র ইউনবি তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। ওই প্রতিবেনে বলা হয়েছে, বরিশালের বড় গভীর নদ-নদীগুলোতে চর পড়ে যাওয়া ইলিশ মাছ কম আসছে বলে জানান খুলনার রূপসা বাজারের আড়তদার নয়ন।
খুলনা মৎস্য অধিদপ্তর জেলা কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, এ বছর বৃষ্টি হলেও যে পরিমাণ মাছ আসার কথা, ঠিক সেই পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি কম থাকাসহ মাছ ধরতে না পারা, মাছের স্বল্পতার কারণ হতে পারে।