গোপালগঞ্জে আ.লীগের হামলা : স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত, আহত ৩৫
গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের গাড়িবহরে আওয়ামী লীগের হামলায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রিয়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার (৪০) নিহত এবং কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ আহত ৩৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতীর একটি জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে এ হমলার ঘটনা ঘটে। এতে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। চরম ভোগান্তিতে পড়ে ওই সড়কে চলাচলকারীরা।
ঘটনার সময় সেখানে পুলিশ দেখা না গেলেও ঘটনাস্থল থেকে বেশ খানিক দূরে তাদের অবস্থান দেখা যায়।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাড়িবহরে হামলা করে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে। এ সময় সময় টিভির ক্যামেরা পার্সন এইচ এম মানিককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।
জেলা শহরের বেদগ্রামে পথসভা শেষে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া জনসভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। গাড়িবহরটি ঘোনাপাড়া এলাকায় পৌছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একদল সশস্ত্র লোক গাড়ির গতি রোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় এস এম জিলানীর গাড়িসহ অন্তত ৮-১০টি গাড়িতে ভাংচুর চালায় তারা।
এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সড়কের পাশে থাকা গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে পিছু হটে তারা। কিছুক্ষণ পর মাইকিং করে সংঘটিত হয়ে আবারও হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে এস এম জিলানী, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারসহ (৩৫) অন্তত ৩৫ জনকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে দিদারের মৃত্যু হলে দিদারের মরদেহ অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখে এবং পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চরপাথালিয়া নামক স্থানে ফেলে রেখে যায়।
আহতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি নাসির আহমেদ মোল্লা (৫৫), স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মাহমুদ খান মুরাদ (৪৬), জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক রাজু বিশ্বাস (৩৯), ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লিল্টু মুন্সি (৪৫), ঢাকার মতিঝিলের স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা বাদশা মিয়া (৩৫) ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিশানসহ (৩১) ১০ জনকে তাৎক্ষণিক গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় গুরুতর আহত অবস্থায় এস এম জিলানী, জেলা যুবদলের সদস্য এস এম শরিফুল ইসলাম সবুজকে উন্নত চিকিৎসার ঢাকায় পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, ‘হামলা কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি। তবে তিনি বলেন একবার শুনেছি বিএনপি করেছে, আবার শুনেছি আওয়ামী লীগ করেছে। ঘটনার সময় আমরা ছিলাম না, তাই ঘটনার বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই। ওই সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের গাড়িবহরে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনে আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
নিহত দিদারের বাড়ি ঢাকার উত্তর যাত্রাবাড়ীতে। তিনি একজন ক্রিকেট আম্পায়ার ছিলেন।