বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের প্রতিবাদে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস ও কিশোর জয়ন্ত কুমার সিংহ নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। গতকাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন, কেউ অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম করলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কাছের থানায় সোপর্দ করতে হবে। তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে। কিন্তু, কোনো অবস্থাতেই গুলি করে হত্যা করা যাবে না।
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীকারী বাহিনী কর্তৃক অতীতে কিশোরী ফেলানী খাতুনসহ বহু মানুষকে বে-আইনিভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৩ বছরের কিশোরী স্বর্ণা দাস এবং ১৫ বছর বয়সী শ্রী জয়ন্ত কুমার সিংহকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীকারী বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার এর কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তের পাশে জলাশয়ে পৌঁছামাত্র হঠাৎ বিএসএফকে দেখে স্বর্ণা।
এ সময় সে আতঙ্কিত হয়ে অনুনয় বিনয় করে বলে আমাকে মেরো না, আইনের আশ্রয়ে নিয়ে নাও। তার কথাগুলোর প্রতি উত্তরে বিএসএফ এর বুলেটে বুক ঝাঁজরা হয়ে যায় স্কুল ছাত্রী স্বর্ণার। ৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাও জেলার বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা সীমান্তে ১৫ বছরের জয়ন্ত কুমার সিংহ বিএসএফের গুলিতে নিহত হন।
মানববন্ধন থেকে দাবি করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাগচী, প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রতীভা বাকচী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট শুভ মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠণিক সম্পাদক বিশ্বনাথ মোহন্ত, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি গৌতম সরকার অপু, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি মধু, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু প্রমুখ।
হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন, বর্ডার গার্ড এ্যাক্ট, বিএস এফ অ্যাক্ট, পাশপোর্ট আইন, রেজিষ্ট্রেশন অফ ফরেন অ্যাক্ট, ফরেন একসেন্স রেগুলেশন অ্যাক্ট, কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ইমিগ্রেশন অর্ডিন্যান্স, জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত সার্বজনীন ঘোষণাপত্রসহ কোনো আইনেই গুলি করে মানুষ হত্যার কোনো বিধান নেই। কেউ অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম করলে তাকে গ্রেপ্তার করে নিকটস্ত থানায় সোপর্দ করতে হবে। তাকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে। শাস্তি বিধান করা যাবে। কিন্তু, কোনো অবস্থাতেই গুলি করে হত্যা করা যাবে না। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের গভীর ক্ষোভ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত বিচার এবং নিহতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপুরণ দাবি করছে। নেতারা ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।