সাভারে আরেকটি হত্যা মামলায় আসামি শেখ হাসিনা-রেহানা-জয়সহ ২১৬ জন
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২১৬ জনকে আসামি করে সাভারের আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাসেল গাজী (২৭) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলাটি দায়ের করেন তার মামাতো ভাই সাহেব আলী।
আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারপিট ও গুলিবর্ষণ করে হত্যা ও হত্যার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
নিহত রাসেল গাজী (২৭) ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার গাজীরচট মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত বেলায়েত গাজীর ছেলে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল পুলিশ বক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান রাসেল গাজী।
মামলায় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের সাবেক কর্মী জাহিদ হাসান শাকিল, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন ভূইয়া।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাইপাইল পুলিশ বক্সের পশ্চিমপাশে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার উদ্দেশে নির্বিচারে গুলি চালায়।
দুপুর পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয় অন্তত ৪০০ জন। এদের মধ্যে মারা যান ৩৫ জন। গুলিবিদ্ধ রাসেল গাজীকে প্রথমে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার হাবিব ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে স্থানান্তর করা হয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৫টার দিকে মারা যান রাসেল গাজী।