সাভারে শেখ হাসিনা-কাদেরকে আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫২ জনকে আসামি করে সাভারের আশুলিয়া থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তৌহিদুর রহমান (২৮) নামের এক পোশাক শ্রমিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ মামলাটি দায়ের করেন তার স্ত্রী নাসরীন আক্তার।
আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারপিট ও গুলিবর্ষণ করে হত্যা ও হত্যার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
নিহত তৌহিদুর রহমান যশোরের কেশবপুর থানার ভালুকঘর গ্রামের আব্দুল জব্বার মোল্লার ছেলে। তিনি ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) সিকেডিএল নামের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন দুপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে বাইপাইলে গুলিবিদ্ধ হন তৌহিদুর রহমান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসন খান, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির সরকার, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মাদবর, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম আহাম্মেদ ভূইয়া সুমন, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান, যুবলীগ নেতা আরিফ মাতবর ও সানাউল্লাহ।
মামলার বাদী নাসরিন আক্তার জানান, স্বামীকে হারিয়ে দুই বছরের কন্যাশিশু আয়েশা আয়াতকে নিয়ে দুঃখের সাগরে পড়েছেন তিনি। ‘ভাই আমার দুঃখের শেষ নেই। স্বামীর মৃত্যুর পর আমাকে শ্বশুড়বাড়ি থেকে বের করে আমার মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামীহারা এই শিশুকে নিয়ে আমি কীভাবে বাঁচব? কোথায় যাব?’, বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।