উৎপাদনে ফিরেছে আশুলিয়ার বেশিরভাগ পোশাক কারখানা
হাজিরা বোনাস বৃদ্ধিসহ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আজ বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) খুলেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানা। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত সব কারখানা নির্বিঘ্নে চলবে—মালিকপক্ষের এমন ঘোষণার পরও বন্ধ রয়েছে ১৯টি।
কারখানা খুলে দেওয়ায় তৈরি পোশাক শ্রমিকদের পদচারণায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে আশুলিয়ায়। দাবি মেনে নেওয়ায় কারখানায় ফিরেছে স্বস্তি।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকেই নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে ছুটছেন তৈরি পোশাক শ্রমিকরা। আশুলিয়ার জামগড়া, জিরাব, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুরসহ শিল্পাঞ্চলজুড়ে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি।
দেশের পোশাক খাতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলে আসা শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। বৈঠক শেষে আজ বুধবার থেকে দেশের সব শিল্পকারখানা খোলা রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
আশুলিয়া জোনের শিল্প পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম নতুন করে ১৯ কারখানা বন্ধের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছড়া শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নানা সংকটে আগে থেকেই শিল্পাঞ্চলে এক হাজার ৮৬৩টি তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে ১৬৯টি বন্ধ ছিল। এর সঙ্গে ১৯টি কারখানা যোগ করে বন্ধ কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮টি।
বন্ধ রাখা কারখানার তালিকায় আছে বিদেশি কোম্পানির কারখানাও। জানা গেছে, আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করতে না পারায় এসব কারখানা বন্ধ রয়েছে। শ্রমিক বিক্ষোভের এড়াতে এসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানাগুলোর মধ্যে আছে—এক্টর স্পোর্টিং লিমিটেড, গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড, সাউথ চায়না ব্লিসিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, গোল্ডটেক্স লিমিটেড, সিডকো গ্রুপ। যদিও নিজেদের গাফিলতির কারণে ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলোর শ্রমিকেরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
কারখানায় ভাঙচুর, লুটপাট, উচ্ছৃঙ্খলতা, কাজ না করা, স্টাফদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা এবং আইন বহির্ভূত কাজে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ১২১ শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আজ কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
শিল্প পুলিশ বলছে, যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে, শিল্পাঞ্চল ঘিরে রয়েছে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের তৎপরতা।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া মেনে আমরা কারখানা খুলে দিয়েছি। আশা করছি আগের গতিতে আবারও ফিরবে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার উৎপাদন কার্যক্রম। এখন আমাদের সবার দায়িত্ব অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে এ খাতকে আরও গতিশীল করা।