গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ, বেতন-ইনক্রিমেন্টসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ
গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে নগরের কোনাবাড়ীতে আরেকটি একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এই বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। শ্রমিকরা জানান, আজ সকালে সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার মেম্বার বাড়ি এলাকার সিলিকন সুইং লিমিটেডের শ্রমিকরা কাজে যোগদানের জন্য কারখানায় আসেন। পরে তারা কাজে যোগদান না করে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে কারখানার কর্মকর্তা মানবসম্পদ বিভাগ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা লাভলীর পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে কারখানা সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অন্যদিকে, গাজীপুরের কোনাবাড়িতে বেতন বৃদ্ধি সহ ১৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে যমুনা ডেনিমস লিমিটেড কারখানার পোশাক কারখানার কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সকালে কাজে যোগ না দিয়ে কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
তাদের ১৯ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দাবিগুলো হলো—
১. সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থগিত হওয়া বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের টাকা মোট বেতনের ১০ শতাংশ চলতি মাসের বেতনের সঙ্গে এরিয়া আকারে দিতে হবে।
২. ২০২৩ সালের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী বাড়ানো বেতন (ডিসেম্বর থেকে আগষ্ট) পর্যন্ত এক সঙ্গে চলতি মাসের বেতনের এরিয়া আকারে দিতে হবে।
৩. সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটির টাকা দিতে হবে এবং বকেয়া ছুটির টাকা চলতি মাসের বেতনের সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। ৪. চাকরির বয়স ছয় মাস হলে বেসিক সমপরিমাণ ঈদ বোনাস দিতে হবে।
৫. সকল কর্মচারী এবং শ্রমিকদের তাদের কর্ম দক্ষতা অনুযায়ী প্রমোশন ও গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৬.কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের ৩ দিন লেট করলে হাজিরা এবং হাজিরা বোনাস কর্তন করা যাবে না।
৭. কোনো শ্রমিক এবং কর্মচারীদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হলে বিজিএমইএ’র আইন অনুযায়ী ৩ মাস ১৩ দিনের বেতন এবং সম্পূর্ণ সার্ভিস বেনিফিট নগদ প্রদান করতে হবে।
৮. চাকরিরত কোনো শ্রমিক ও কর্মচারী-কর্মকর্তা অসুস্থ হলে তার সকল চিকিৎসা খরচ কোম্পানিকে বহন করতে হবে।
৯. কোনো শ্রমিক বা কর্মচারী মারা গেলে তার লাশ কোম্পানিকে নিজ দায়িত্বে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হবে।
১০. ব্যবস্থাপকের বেতন ৬৫ থেকে ৭০ হাজার করতে হবে ইত্যাদি।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, যমুনা গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধিসহ ১৯ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করছে। এসময় তারা কোনাবাড়ী কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক বন্ধ করে দেয়। যার ফলে এই আঞ্চলিক সড়কে যানচলাচল ব্যাহত হয়। চেষ্টা করছি যানচলাচল স্বাভাবিক করতে।