সরকারের মধ্যে ফ্যাসিস্ট আ.লীগের প্রেতাত্মা অবস্থান করছে : কাদের গনি চৌধুরী
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশের) মহাসচিব এবং সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র দেশের ভেতর ও বাইরের। পতিত সরকারের দোসরদের চারপাশে বসিয়ে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়। এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে ফ্যাসিবাদের দালালরা।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় নিউইয়র্কে এক মতবিনিময় সভায় কাদের গনি চৌধুরী এসব কথা বলেন। শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ডিসি হিসেবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ফ্যাসিবাদের দোসর। সচিব, উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় সকলেই শেখ হাসিনার দোসর। এদের না সরালে সরকারকে বিপদে পড়তে হবে। বিভিন্ন বাহিনী থেকে ‘র’ এর এজেন্টদের সরাতে হবে। না হয় ফ্যাসিবাদ আবার ঠুস করে ঢুকে পড়বে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আজ একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান তারেক রহমানের। তাঁর নির্দেশেই আমরা জীবনবাজি রেখে রাজপথে নেমে এসেছিলাম। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তারেক রহমানকে মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। তাঁকে এখনো আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। বিভিন্ন রকম টালবাহানা চলছে। কোনোরকম টালবাহানা দেশের মানুষ সহ্য করবে না। আমরা পরিষ্কার করে সরকারকে বলে দিতে চাই, সব মামলা প্রত্যাহার করে দ্রুত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সাংবাদিক, পেশাজীবী ও আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মামলার প্রসঙ্গ টেনে পেশাজীবীদের এ নেতা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দেওয়া উদ্দেশ্যমূলক সমস্ত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে সাংবাদিকদের এই নেতা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করার নানা ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কেউ বিগত দখলদার সরকারের মতো এই সরকারকে ক্ষমতা দখলে রাখার কুপরামর্শ দিচ্ছে। এই ফাঁদে পা দেওয়া হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী। বিএনপি বলেছে, একটি যৌক্তিক সময় সরকারকে অবশ্যই দেবে। যৌক্তিক সময় মানে এই না যে তারা অনেক বেশি সময় নিয়ে আমাদেরকে পূর্বের অভিজ্ঞতার মতো অন্য কিছুর মধ্যে জড়িয়ে দেবে। সেটা করা যাবে না। যত দ্রুত নির্বাচন দেওয়া যাবে, ততই দেশের জন্য এবং অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি আহসান উল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জাকির এইচ চৌধুরী, আবদুর রহিম বাহার, নুর আলম, মাসুদ রানা, খান মোহাম্মদ টিপু, জাহাঙ্গীর আলম, মাহমুদুল হক, সালেহ আহমেদ রুমেল, মশিউর রহমান রুবেল, হারুন রশীদ ও মোজাম্মেল হোসেন সাগর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আল মামুন সুমন।
২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি বিএনপিনেতা তৌহিদ ইসলামকে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে র্যাব তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর ৩০ জানুয়ারি বেগমগঞ্জে রাস্তার পাশে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।