সাবেক সেনাপ্রধান এসএম সফিউদ্দিনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ
সাবেক সেনাপ্রধান এসএম সফিউদ্দিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন ও মেজর জেনারেল সরোয়ার হোসেনের (অব.) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) গুমের ঘটনার কথা উল্লেখ করে এই অভিযোগ দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাবেক সেনাকর্মকর্তা ব্যারিস্টার এম সারোয়ার।
অভিযোগে তিনি বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গুম করার উদ্দেশে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর বেলা ১১টায় চা খাওয়ার কথা বলে একটি সংস্থার (আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে) সদর দপ্তরে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে ১১ ঘণ্টা গুম থাকার বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, ১ নম্বর আসামি ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করে, মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ করে সেনাপ্রধান হিসেবে পদোন্নতি পান। সেনাপ্রধান হিসেবে ২০২৪ সালে পাতানো নির্বাচনে সহযোগিতা করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেন। ২ নম্বর আসামি ২০১০ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পদে একটি সংস্থায় চাকরি করেছেন। সে সময় অগণিত মানুষকে আয়নাঘরে বন্দি করে রাখেন। অনেক মানুষকে ক্রসফায়ার করেন, যা তদন্ত করলেই সত্য বের হয়ে আসবে। তিনি ঘৃণিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পাতানো নির্বাচনে সহায়তা করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন তিনি। তিনি ছিলেন পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর।
৩ নম্বর আসামি ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত নিজেকে জাতীয়তাবাদী ঘরানার লোক বলে পরিচয় দিতেন। কিন্তু ২০০৯ সালের পর হঠাৎ করে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী হয়ে অতি আওয়ামী লীগ সেজে বসেন। মূলত ধান্দাবাজি করার জন্যই তার এই অপচেষ্টা। ২০১৫-২০১৬ সালে একটি সংস্থার পরিচালক থাকাকালীন তিনি গুম ও খুনসহ নানাবিধ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধ সংঘটিত করেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। তিনিও ছিলেন পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর।
অভিযোগে ব্যারিস্টার এম সারোয়ার আরও বলেন, ২০ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরি করার পর স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে ২০০৭ সাল থেকে আইন পেশায় নিয়োজিত হই। ২০০৮ সালে থেকে সুশাসন, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলি। বিশেষ করে দেশ ও বিদেশে মিডিয়ায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা স্বৈরাচারের দোসর, গুম খুনের হোতা, আয়নাঘর সৃষ্টিকারী ও রক্ষণাবেক্ষণকারী।
অভিযোগে বলা হয়, তারা কোনো সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। আমি যেহেতু গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারের জন্য কথা বলি এবং ফ্যাসিস্ট রেজিমের সমালোচনা করি, সে জন্য তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। আমাকে জেলও খাটতে হয়েছে। একে একে আমার বিরুদ্ধে ৯টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।