বেনাপোল বন্দরে ৩ কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য জব্দ
বেনাপোল বন্দরে তিন কোটি টাকার কাগজবিহীন উন্নতমানের গার্মেন্টস পণ্য জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বন্দরেরে ১৭নং শেড থেকে ট্রাকে লোড করার সময় এ পণ্য চালান জব্দ করা হয়।
কাস্টমস সূত্র জানায়, ভারত থেকে আসা পণ্য চালানটি বন্দরের ১৭নং শেড ইনচার্জ আব্দুল মতিনের সহযোগিতায় ভারতীয় ট্রাক থেকে আনলোড করা হয়। এরপর আজ সকাল ১০ টার দিকে কাগজবিহীন পণ্যচালানটি কাভার্ডভ্যানে লোড করার সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে। চালানটির মূল্য তিন কোটি টাকা। চালানটিতে সরকারের প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উন্নত মানের গার্মেন্টস পণ্য শাড়ি, থ্রি-পিস, প্যান্টের পিস, বোরখার কাপড়সহ সোফার কাভার রয়েছে চালানটিতে। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব পণ্যের স্বপক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে ১৭নং শেড ইনচার্জ মতিন নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, ‘এই পণ্য কার আমি জানি না। কীভাবে শেডে নামল তা-ও আমি বলতে পারি না।’
শেডের চাবি থাকে শেড ইনচার্জের কাছে, তাহলে এই অবৈধ পণ্যচালানটি আনুষ্ঠানিকতা শেষে কীভাবে বন্দরে প্রবেশ করল? গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইনচার্জ মতিন বলেন, ‘আমার এখানে প্রান্ত নামে একজন এনজিও কর্মী থাকে। তিনি মিয়ান নামে একটি সিএন্ডএফ এজেন্সির বর্ডারম্যান আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় শেডে পণ্য আনলোড করেন আমার অনুপস্থিতিতে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থলবন্দরের কার্গো শাখা থেকে একজন জানান, বেনাপোল সিএন্ডএফ ও অ্যাসোসিয়েশনের বইয়ের তালিকায় ওই সিএন্ডএফ এজেন্সির নাম নেই বা তাদের কোনো অফিসও নেই। এমনকি আব্দুল্লাহ নামে কোনো বর্ডারম্যানও নেই।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন বেনাপোলের একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। চক্রটি জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করে।
পণ্য চালানটি পরীক্ষণের সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেন, কী পরিমাণ পণ্য আছে তা ওজন করে পরবর্তীতে জানানো যাবে। এসব পণ্যর কোনো বৈধ কাগজপত্র বা পণ্যের কোনো মালিক পাওয়া যায়নি।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, জব্দ করা অবৈধ পণ্য চালানটির বিষয়ে কাস্টমস তদন্ত করছে। তবে বন্দরের কারও দায়িত্ব পালনের অবহেলা থাকলে, তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।