আওয়ামী লীগ আর রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না : তথ্য উপদেষ্টা
‘শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগ করেননি, এটা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট। তাঁর পতন হয়েছে, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে, তা হবে গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আমরা অবশ্যই আমাদের জীবন থাকতে তা হতে দেব না। আওয়ামী লীগ যেই মতাদর্শ দিয়ে রাজনীতি করেছে, যে প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করেছে, তাতে আওয়ামী লীগ আর কখনও বাংলাদেশে রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না।’
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যে দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কি না, এ বিষয়ে কোনো দ্বিধার অবকাশ নেই। আমরা যদি বলি আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল, তাহলে একটি ফ্যাসিস্ট দল গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কীভাবে রাজনীতি করতে পারে?’
রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটা হবে রাজনৈতিক উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য এবং সরকারের বাইরে থাকা গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শক্তির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে। এ বিষয়ে অনেকে সাংবিধানিক জটিলতার কথা বললেও আমি মনে করি এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে সবাই মিলে একটি ঐকমত্যে পৌঁছালেই কেবল এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই লক্ষ্যেই আলোচনা করছে। আলোচনার পর সরকারের একটি বক্তব্য আসবে।’
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকে ফ্যাসিবাদের সূত্রপাত ঘটে। সেই সময় থেকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর থেকে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে উঠেছে জুলাই আন্দোলনের। সরকার এটিকে রাজনৈতিকভাবে দমন করতে চেয়েছিল। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নিহত হলে জনগণ রুখে দাঁড়ায়। যখন আমাদের ‘রাজাকার’ বলা হয়, তখন শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। ফলে আমরা যে লড়াই করেছি, তা আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে তুলনা করছে। আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণ ভুল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করে এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু এবারকার সরকার গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে সংস্কার করে যেতে না পারলে, আমাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা মসৃণ হবে না। তাই আমাদের কিছু মৌলিক সংস্কার করতে হবে।