গুলিস্তান-জিরো পয়েন্ট আওয়ামী বিরোধী স্লোগানে মুখরিত
শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে হঠাৎ উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো দখল নিয়েছে গুলিস্তান এবং জিরো পয়েন্ট এলাকা। তারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী নানা স্লোগান দিচ্ছেন। এতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
আজ রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেয় আওয়ামী বিরোধীরা। তারপর থেকে তারা ‘খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের, ঠাঁই নাই বাংলায়’, ‘খুনি কে খুনি কে, শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা।’ এমন নানা ধরনের স্লোগানে মুখরিত এ এলাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঠিক দুপুর ১টার দিকে গুলিস্তানের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে এক ব্যক্তি ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন। তারপর তাকে স্থানীয় জনতা ধাওয়া ও কিল-ঘুষি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
দুপুর সোয়া ১টার দিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে, ‘কোনো নেত্রী আছে, কোন সে নেত্রী; খালেদা জিয়া’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, ফিরবে আবার বাংলাদেশে’, ‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘আমার সোনার বাংলায় শেখ হাসিনার ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের গুন্ডারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘খুনি হাসিনা পালাইছে রে পালাইছে’সহ নানান ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।
আজ শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছে, তারা গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে জমায়েত করবে। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাসহ আওয়ামী বিরোধীরা তাদের প্রতিরোধের ডাক দিয়েছ। এ উপলক্ষে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র-জনতা ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন।
তবে, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গুলিস্তান ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় দেড়টা পর্যন্ত থেকে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। যদিও বিকেল তিনটার সময় জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হওয়ার কথা আওয়ামী লীগের।
অন্যদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবস্থান নিয়েছে পুলিশও। পুলিশ এই এলাকাগুলো পাহারা দিচ্ছে। আজ রোববার সকাল থেকে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের গুলিস্তানের কার্যালয়ের সামনে বিএনপিসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। তারা আওয়ামী বিরোধী নানান ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন সকাল থেকেই। আর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি করে সেখানে অবস্থান নেন।
দেখা যায়, আওয়ামী বিরোধীরা একে একে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও এ এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে, শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে তার পরিবার সদস্যরা জিরো পয়েন্টে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। পরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও সেখানে এসে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে, গুলিস্তান, নূর হোসেন চত্বর ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সকাল থেকে জিরো পয়েন্টসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে।
এটিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ৯ নভেম্বর তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ১০ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় এবং তাদের নেতাকর্মীদের সেখানে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানায়।
এ ছাড়া, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত থেকে গুলিস্তানে বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য দল ও সংগঠনও অবস্থান নেয়। রাতের মধ্যে, ছাত্রলীগের কর্মী সন্দেহে দুজনকে মারধর করার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়।