সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় ড. ইউনূসকে সিপিজের চিঠি
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) ড. ইউনূসের ই-মেইলে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সিপিজের সিইও জোডি গিনসবার্গ।
সিপিজের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই চিঠিতে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ২০০৩ সালে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে ঘোষণা দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করে সিপিজের সিইও বাংলাদেশের সংবিধান এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলো রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ন করে, এমন সব আইন অবিলম্বে স্থগিত করারও আহ্বান জানানো হয়।
সিপিজে আরও বলছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের কাজের জন্য তাদের বিরুদ্ধে শতশত মামলা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারে সরকারকে সহায়তা করতে হবে। বিশেষ করে কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থক চার সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের ক্ষেত্রে যেন যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়; তারা যেন সুষ্ঠু বিচার পান–তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর দ্রুত, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আইনবহির্ভূতভাবে সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি ও হয়রানির ঘটনার অবসান চেয়েছে সিপিজে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমন্বিত সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আইনটি এমন হবে, যাতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনভাবে ও নিরাপদে সংবাদ প্রকাশের অধিকার রক্ষিত হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলকে সংস্কার করে একটি স্বাধীন, স্বনিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। যেন সাংবাদিকদের অপরাধী সাব্যস্ত না করে বা তাদের কাজে বিধিনিষেধ আরোপ না করে সাংবাদিকতার নৈতিকতা থেকে যেকোনো অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে পারে এই প্রতিষ্ঠান।