ত্রিভুজ প্রেমের বলি কলেজছাত্র, নিখোঁজের ৮ দিন পর মরদেহ উদ্ধার
শেরপুরে নিখোঁজের আটদিন পর শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমনের (১৭) মাটিচাপা দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) দিনগত রাতের প্রথম প্রহরে শহরের সজবরখিলার ফোরকান পুলিশের বাড়ি থেকে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ফোরকান আলীর ছেলে রবিন, তার প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত সুমনের বাবার নাম নজরুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি জেলা সদরের কসবা বারাকপাড়ায়।
শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম জানান, গত ৪ নভেম্বর কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সুমন নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন তার খোঁজ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা জানতে পারে এক তরুণীর সঙ্গে সুমনকে যেতে দেখা গেছে। তারপর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গত ১০ নভেম্বর দুপুরে সুমনের মা-বাবাসহ স্থানীয়রা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলামকে বিষয়টি জানান। পরে তারা ওই তরুণীসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে শেরপুর থানায় একটি গুমের মামলা করেন। সেই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ প্রথম সেই তরুণী এবং তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে রবিনকেও গ্রেপ্তার করা হয় ময়নসিংহ সদর থেকে। পরে রবিন ও তার প্রেমিকা জানায় সুমনকে হত্যা করে রবিনের বাড়িতে মাটিচাপা দেওয়ার কথা। তাদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মূলত এই ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিভুজ প্রেমের জেরে। রবিন ও সুমন পরস্পর বন্ধু। দুজনের সঙ্গেই প্রেম করত ওই তরুণী। একপর্যায়ে রবিনের সঙ্গে মিলে আরেক প্রেমিক সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। সুমনকে ওই তরুণী ডেকে নিয়ে যায় রবিনের বাড়িতে। এ সময় রবিনকে কোল্ডড্রিংকসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। এরপর সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তাকে বাড়ির পাশের শিমের মাচার নিচে মাটিচাপা দেয় রবিন ও তার প্রেমিকা মিলে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ বিষ না সাথে আঘাত করা হয়েছে তা নিশ্চিত জানা যাবে। আর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।