নতুন অনেক ইতিহাসের সাক্ষী আদালতপাড়া
২০২৪ সালে রাজনৈতিক কারণে সারা বছরেই নিম্ন আদালত উত্তপ্ত ছিল। স্বাধীনতার ৫৩ বছরের ইতিহাসে এইভাবে সরকার পতনের নজির বাংলাদেশে নেই। সরকার পতনের আগে ও পরে সবার চোখ ছিল আদালতে। এর মধ্যে কোটা আন্দোলনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, রিমান্ড, ভিআইপিদের আনাগোনা, ডিম নিক্ষেপ, জয় বাংলা ম্লোগানসহ একাধিক বিষয় ছিল চোখে পড়ার মত। এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের উদ্দেশে ২০২৪ সালে আদালতপাড়ায় ঘটে যাওয়া কিছু আলোচিত ঘটনার উল্লেখ করা হলো।
রাজধানী থেকে তিন হাজার বিক্ষোভকারী আটক ও কারাগারে
কোটা আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো ছাত্র ও বিক্ষোভকারীদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তাদের কারাগারেও প্রেরণ করা হয়। যা ছিল বছরের আলোচিত ঘটনার মধ্যে অন্যতম। কোটা আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ২২৯টি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয় দুই হাজার ৭৬৪ জন।
জানা যায়, গত ২২ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ আরও ৪৭৪ জনকে কারাগারে পাঠায়। তার আগে একই দিন (২২ জুলাই) আরও ৩৯৪ জন, ২১ জুলাই ১৮৮ জন, ২০ জুলাই ১৪২ জন ও ১৯ জুলাই ৬০ আসামিকে কারাগারে পাঠায়। এছাড়া ২৭ আসামির তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
কারাগারে পাঠানো আসামিদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার ৩৭ জন, বাড্ডা থানার ৫০ জন, ভাটারা থানার ১৮ জন, মোহাম্মদপুর থানার আটজন, আদাবর থানার চারজন, তেজগাঁও থানার ১১ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ছয়জন, হাতিরঝিল থানার ১৩ জন, রমনা মডেল থানার একজন, তুরাগ থানার সাতজন, উত্তরা পূর্ব থানার ২৪ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ছয়জন, পল্টন মডেল থানার চারজন, মতিঝিল থানার সাতজন, শাহাজাহানপুর থানার ছয়জন, রামপুরা থানার ১৮ জন, সবুজবাগ থানার একজন, কলাবাগান থানার তিনজন, নিউমার্কেট থানার আটজন, সূত্রাপুর থানার পাঁচজন, ওয়ারী থানার ৪১ জন, ক্যান্টনমেন্ট থানার দুজন, রূপনগর থানার ১২ জন, পল্লবী থানার ১৮ জন, কাফরুল থানার ছয়জন, কদমতলী থানার ৪৪ জন, ধানমণ্ডি থানার সাতজন, মুগদা থানার ছয়জন, যাত্রাবাড়ী থানার ২৬ জন, ডেমরা থানার মামলায় ১৮ জন, বনানী থানার ৩৮ জন, গুলশান থানার চারজন, বিমানবন্দর থানার দুজন, কোতোয়ালি থানার পাঁচজন, বংশাল থানার চারজন, লালবাগ থানার চারজন রয়েছেন।
উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি গোলাম পরওয়ার, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর।
মেট্রোরেল স্টেশন ভাঙচুর, সাংবাদিক-ছাত্র-বিএনপিনেতা কারাগারে
রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোরেল স্টেশন ভাঙচুরের মামলায় সাংবাদিক হাফিজ আল আসাদ ওরফে সাঈদ খানসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সাঈদ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি। এছাড়া একই ঘটনায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সানাউল হক নিরু, আলমগীর, মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া ওরফে নাইম, আব্দুল আজিজ সুলতান ও মাইনকে আটকের পরে কারাগারে নেওয়া হয়।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কাফরুল থানাধীন কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক কোটা সংস্কার আন্দোলন করে। তারা দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা, লোহার রড, হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র যেমন—রামদা, দা, কুড়াল, শাবল, কাটার, হাতুড়ি ইত্যাদি নিয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ও নাশকতা সংঘঠিত করার লক্ষ্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও পরিচালনাধীন এমআরটি লাইন-৬-এর কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের প্রবেশ বা বহির্গমন গেট ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে। পরে কেপিআইভুক্ত সরকারি স্থাপনা কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের কনকোর্সে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালায় এবং মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি লুটপাট করে নিয়ে যায়।
আরও জানা গেছে, আসামিরা অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করে ক্ষতি সাধন করে। ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ফলে এই মেট্রোরেল স্টেশনের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক অনুযায়ী আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে কাফরুল থানার আওতাধীন অংশের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধন ও বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। গ্রেপ্তার আসামিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে সরকার উৎখাতের জন্য পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই মেট্রোরেল স্টেশনের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
সেতু ভবনে হামলা, শিক্ষার্থীসহ একাধিক ব্যক্তি কারাগারে
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীর মহাখালী অবস্থিত সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিভিন্ন সময়ে রিমান্ডেও আনা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন- বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাব, জাবি শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল, ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওহীদ ইবনুল বদর সাফওয়ান ও তিতুমীর কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব।
এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো সেতু ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথারীতি অফিসের কার্যক্রম করতে থাকেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসামি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার লক্ষ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে অফিসের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
পরবর্তীতে, সেতু ভবনের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদ-পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক ভীতি সৃষ্টি করে সেতু ভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা আমাদের অফিসের মূল ফটক ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলার ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যান্টিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটর কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায়।
এ সময়ে সেতু ভবনের জ্যেষ্ঠ সচিব ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সেতু ভবনের ভেতরে থাকা অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মী আসামিদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল দিয়ে হত্যার উদ্দেশে সেতু ভবনের জ্যেষ্ঠ সচিব, অন্য অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মীদের এলোপাতাড়ি মারধর করে সাধারণ ও গুরুতর জখম করে।
পরে আসামিরা নিচতলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড থেকে চেয়ার-টেবিলসহ অন্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলা থেকে ১১তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার-টেবিল, আসবাবপত্রসহ সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল চুরি করে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়।
আসামিদের এমন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগে সেতু ভবনের নিচতলা থেকে ১২তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল-প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প সেতু বিভাগের আওতাধীন সব প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিল, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইসারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, নয়টি পিকআপ, সাতটি মাইক্রোবাস, একটি মিনিবাস, পাঁচটি মোটরসাইকেল, একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিলে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মারফত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বিটিভি ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
বিটিভি ভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান ওরফে শিমুল বিশ্বাস ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরবসহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পরে কারাগারে পাঠনো হয়। কারাগারে পাঠানো অন্যতম আসামিরা হলেন—বিএনপিনেতা রফিকুল ইসলাম মজনু, রশীদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এহসানুল হুদা, মহিউদ্দিন হৃদয় ও তরিকুল ইসলাম।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ডিআইটি রোডগামী রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও বিটিভি ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ‘শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে ও সক্রিয় অংশগ্রহণে’ অজ্ঞাতনামা তিন-চার হাজার কর্মী দলবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আসামিরা দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বিটিভি ভবনের প্রধান চারটি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা ভবনের ভেতর ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। টেলিভিশন ভবনে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
নথিকে আরও বলা হয়েছে, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভেতরে থাকা সরকারি মালামাল ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করে। যার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি রাত ৯টার দিকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেদিনের হামলায় বিটিভির পোর্টেবল ডিএসএনজি সিস্টেমের সব সম্প্রচার যন্ত্রপাতি, এসব যন্ত্রপাতি পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস এবং কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়। ১৭টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ৯টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
বিটিভির মূল ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ঢাকা কেন্দ্রের রিসিপশনে অগ্নিসংযোগ, ট্রান্সপোর্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ, ক্যান্টিনে, অডিটোরিয়ামে অগ্নিসংযোগ, মেকআপ শাখা ভাঙচুর, ডিজাইন শাখার মেকআপ (ওয়ার্কশপ, স্টোর, ওয়ারড্রব ও গ্রাফিকস রুম) রুমে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
ঢাকার নিম্ন আদালতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ
ঢাকার নিম্ন আদালতে গত ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারী, পুলিশ ও আইনজীবীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র তৈরি হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শত শত আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে নিম্ন আদালতের দিকে এগোচ্ছেন। এ সময় পুলিশ আদালতের গেট নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিলে আন্দোলনকারীরা আদালত চত্বরে ঢুকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ করে এবং আদালতের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্যানেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের জামিন ও কারামুক্তি
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আটক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা হয়।
২০১৩ সালে এক মামলায় তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়। এর আগে অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ বছর কারাদণ্ড হয়েছে, যা পরে হাইকোর্ট বাতিল করে দেন। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের এক মামলায়ও তিনি ১০ বছরের দণ্ডে দণ্ডিত হন।
গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন জানান, সবগুলো মামলায় তিনি জামিন পেয়ে মুক্তি পান।
ঋণের নামে সোনালী ব্যাংকের ৩২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের জুনে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত বাদী হয়ে মঙ্গলবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
বিএনপির দুই হাজার ২০০ আসামির জামিন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপি-জামায়াতের দুই হাজার ২০০ নেতাকর্মীর জামিন দেন আদালত। গত ৬ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একাধিক বিচারক এই আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান ওরফে শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, ১২ দলের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি (বিজেপি) ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
অর্থ আত্মসাতের মামলায় খালাস ড. ইউনূস
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের সংরক্ষিত ফান্ডের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনকে খালাস দেন আদালত।
গত ১১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম এই আদেশ দেন। সেদিন আদালতে দুদক মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে তাদের মামলা থেকে খালাস দেন।
খালাস পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী। এছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম।
পটপরিবর্তনে প্রথম গ্রেপ্তার সালমান রহমান ও আনিসুল হক
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ৫ আগস্টের পর পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। যা সে সময় অনেক আলোচনার জন্ম দেয়। গত ১৩ আগস্ট বিকেলে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরে তাদের কয়েকটি মামলায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পরপরই তার মন্ত্রী ও দলের নেতারা আড়ালে চলে যান।
বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলায় খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি দেন আদালত। গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মো. আবু তাহের এ আদেশ দেন। অপর দুজন হলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এ ছাড়া এ মামলার আসামি হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান ও মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন।
নথি থেকে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১৩ জন। এর মধ্যে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। অন্য আসামি ব্যারিস্টার আমিনুল হক ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল মারা যান। সাবেক কৃষিমন্ত্রী এম কে আনোয়ার, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম এবং সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন মারা যান।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম। একই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দুদক উপপরিচালক মো. আবুল কাসেম ফকির অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
নিম্ন আদালতে রদবদল
গত ৫ আগস্টের পরে ঢাকার নিম্ন আদালতে বিচারকের ব্যাপক রদবদল হয়। আদালতে বিগত সরকারের আমলে কর্মরত প্রায় সব বিচারককে বদলি করা হয়।
আদালতের জিআর শাখায় রদবদল
৫ আগস্টের পরে আদালতের জি.আর শাখায়ও ব্যাপক রদবদল হয়। গত ১৫ বছর ধরে অনেক পুলিশ সদস্য সেখানে কাজ করে যাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে আদালতের জিআর শাখা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। আদালতের আইনজীবীরা-বিচারপ্রার্থীদের বিভিন্ন সেবা নেওয়ার জন্য অনির্ধারিত বিভিন্ন টাকা দাবি করা হতো। জিআর শাখায় বদলির ফলে আদালতে দুর্নীতি এখন কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
আদালতের পিপি নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এহসানুল হক সমাজীকে পিপি নিয়োগ দেওয়ার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ১/১১ এর সময়ও পিপি হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। পরে আইনজীবীদের ক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
আদালতে নতুন পিপি নিয়োগ
নিম্ন আদালতে আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত পিপিদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে বিচারকাজে স্থবিরতা দেখা দেয়। এরপরে নতুন পিপি নিয়োগের জন্য বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা দাবি জানালে অবশেষে গত ১৫ অক্টোবর ঢাকার আদালতে ৬৬৯ পিপি-জিপি নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরে আদালতে কার্যক্রম চলমান হয়।
বিদেশে পালানোর নাটক, অবশেষে কাঠগড়ায় ব্যারিস্টার সুমন
দেশবাসী সবাই জানতেন ব্যারিস্টার সুমন বিদেশে পালিয়ে গেছেন। অথচ, হঠাৎই তার গ্রেপ্তার নিয়ে দেশে পড়ে যায় শোরগোল। সব নাটকীয়তা ভেঙে তাকে দেখা যায় আদালত প্রাঙ্গণে। তখন তার হাতে হ্যান্ডকাফ, মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা। তাকে দেখতে আগেই আদালতপাড়ায় নামে উৎসুক জনতার ভিড়; ছিলেন আইনজীবী, আদালতের কর্মচারী, বিচারপ্রার্থীরাও। সেখানে ব্যারিস্টার সুমনকে দেখে অনেকে ‘চোর চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাহাসও হতে দেখা যায়।
রিমান্ডের আসামি জামিন পাওয়ায় সমালোচনা
সাবেক সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে রিমান্ড থাকা অবস্থায় জামিন দেওয়া হয়। গত ৮ অক্টোবর রাজধানীর পৃথক ছয় মামলায় জামিন পান সাবের হোসেন চৌধুরী। এ নিয়ে আদালতপাড়ায় রাষ্ট্রপক্ষ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার এই জামিন নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যেও চলে আলোচনা সমালোচনা।
অনেক আইনজীবীর দেখা মিলেনি ৫ আগস্টের পরে
গত ৫ আগস্টের পরে অনেক আইনজীবীর দেখা মিলছে না আদালতপাড়ায়। অনেকে বলছেন, আওয়ামীপন্থি আইনজীবী হওয়ায় তারা গা ঢাকা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ দাবি করছেন—তারা এখন আদালতছাড়া। দীর্ঘদিন আদালত প্রাঙ্গণে না আসাদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু। তিনি পল্টন থানার একটি হত্যা মামলার আসামি। ৫ আগস্টের পর তাকে আর আদালতপাড়ায় দেখা যায়নি। এই তালিকায় আরও আছেন ঢাকা মহানগর সাবেক পিপি আব্দুল্লাহ আবু, আইনমন্ত্রী আনিসুলের ঘনিষ্ঠ বাহার উদ্দিন বাহার, ঢাকা বারের সাবেক সেক্রেটারি ফিরোজুর রহমান মন্টু, সাহাদাত শাওন, জোবায়ের রহমানও। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মামুন, দুদকের সরকারি কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি আবদুর রহমান হাওলাদার, মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদলকেও দেখা যায়নি গণঅভ্যুত্থানের পর।
ভিআইপিদের পক্ষে লড়ছেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন
এর আগে আদালতপাড়ায় ততোটা পরিচিত মুখ ছিলেন না আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন। গত ৫ আগস্টের পরে আসামিদের পক্ষে যখন তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছিল না, তখন পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন এই মোরশেদ। ভিআইপি আসামি খ্যাতদের পক্ষে একের পর এক লড়ে চলেছেন তিনি।
মোরশেদ হোসেন শাহীন তিনি ঢাকা বারের সদস্য। ২০১২ সালে তিনি ঢাকা বারে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তি হয়ে মামলা পরিচালনা শুরু করেন।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে লাঞ্ছিত আইনজীবী মোরশেদ
গত ২২ অক্টোবর আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের মামলার শুনানি শেষে গণমাধ্যমে ব্রিফের সময় পিছন থেকে এক আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীনের ওপর চড়াও হন। এ সময় বলতে শোনা যায়, আসামি পক্ষের আবার কীসের ব্রিফ? এ ঘটনা সমালোচনার জন্ম দেয়।
মোরশেদ আলম শাহিন এনটিভি অনলাইকে বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বাদী এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী থাকতে হয়। আমি শুধু আমার পেশাগত কাজ করে যাচ্ছি। আমি এই পর্যন্ত ৭০ জন আওয়ামী লীগের হেবি ওয়েট আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করছি। মামলা পরিচালনা করার সময় আমার ওপরে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যারিস্টার সুমনের মামলা করার সময় আমাকে মারধর করা হয় এবং আমার সিনিয়র শেখ ফরিদকে আক্রমণ করা হয়েছিল। তবে এখন আর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যদিও আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সরকারের কাছে আমার নিরাপত্তা দাবি করছি।