চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ কর্মকর্তার, দুদকের মামলা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/04/dudok.jpg)
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ছেংগারচর বাজার শাখার ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুদক চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আজগর হোসেন মামলাটি করেন। ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) দীপঙ্কর ঘোষকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করেন অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া। ওই অভিযোগের রেকর্ডপত্র থানা থেকে পাঠানো হয় দুদক কার্যালয়ে। অভিযোগের প্রেরিত রেকর্ডপত্র তথ্যাদির আলোকে দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়।
মামলার বাদী মোহাম্মদ আজগর হোসেন বলেন, মামলার রেকর্ডপত্র ও তথ্যাদির পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) দীপঙ্কর ঘোষ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর মতলব উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগটি করা হয়েছিল। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোন নম্বরে কল করলে তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তাই আসতে দেরি হবে। কিন্তু পরে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে তিনি না এলে পুনরায় দীপংকরকে কল করলে তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ওইদিন প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলফোনে কল দেওয়া হয়। তিনি জানান, ঢাকার বাসা থেকে দীপংকর অফিসের উদ্দেশে গেছেন। তবে দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত হননি। ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।
মো. ইউসুফ মিয় বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না, সেটি যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে গত ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও থানা-পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থাৎ ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ গত কিছুদিন ধরে প্রায়ই কাঁধে করে একটি ব্যাগ নিয়ে আসা-যাওয়া করেছেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ব্যাংকের ভল্টের একটি চাবি তার কাছে রক্ষিত থাকাতে কৌশল অবলম্বন করে তিনি নিজে ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।