রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা থেকে মুজিব পরিবারের সদস্যদের নামফলক ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা প্রথমে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে। হলের নামফলক ভাঙচুর করে ‘বিজয়-২৪’ নামকরণ করে তারা।

‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘শেখ হাসিনার গদিতে, আগুন জালাও একসাথে’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের।

এরপর একে একে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, নির্মাণাধীন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল, কামারুজ্জামান হল, শেখ রাসেল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নামফলক ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ক্যাম্পাসজুড়ে থাকা মুজিব পরিবারের নামে বিভিন্ন গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন মুছে ফেলে তারা।

এ সময় শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ফাতিমা আল ফাহরিয়া হল এবং শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের নাম পরিবর্তন করে শহীদ আলি রায়হান হল এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী নামকরণ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কনিষ্ঠ শহীদ রিয়া গোপের নামে নামকরণ করেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, ‘খুনি হাসিনা মনে করেছে, আমরা সব ভুলে গেছি। খুনি হাসিনার হাতে হাজারো ছাত্রের রক্তের দাগ লেগে আছে। খুনি হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অস্তিত্ব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আর থাকবে না।’ অতিদ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, ‘গতকাল শেখ হাসিনা লাইভে এসে ছাত্র-জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার প্রতিবাদে আমাদের এ কর্মসূচি। আমার ভাইদের রক্তের দাগ না শুকাতেই খুনি হাসিনা প্রকাশ্যে আসার সাহস দেখায় কেমনে? ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া পদচিহ্ন ও রাবি থেকে তাদের শেকড় মুছে দিতে আমাদের আজকের এ আন্দোলন।’

ফাহিম রেজা আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের বাইরে বসে দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে দেশে এনে ফাঁসি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।