পাবনায় জামায়াতের ওয়ার্ড কার্যালয় ভাঙচুর

পাবনায় জামায়াতের ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে হেমায়েতপুরের কুমারগাড়ী এলাকার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জামায়াতের দাবি—হামলার সঙ্গে মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবির হোসেন, মো. রানা, তানজিল ওরফের টোকাই তানজিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উজ্জ্বল হোসেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান বিএনপি নেতা রফিক হোসেন জড়িত।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে আনুমানিক ২৫-৩০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় একটি মুদিদোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। অটোরিকশার গ্যারেজও ভাঙচুর করা হয়। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এরপর জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিমসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজনের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিম অভিযোগ করে বলেন, ‘পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলালের আশ্রয় প্রশ্রয়ে মালিগাছা ও হেমায়েতপুরসহ বেশ কিছু জায়গায় ৫ আগস্টের পর থেকে ইয়াকুব আলী, মাহমুদুল হাসান, আবির হোসেনসহ বিএনপি- ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তার, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। এই নেতার নির্দেশে আধিপত্য বিস্তার ও নিজেদের শক্তি জানান দিতে আমাদের অফিসে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক গুলিবর্ষণ করেছে। এসব সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মোটেও অবগত নয়। যখন এ ঘটনা ঘটে তখন থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেই। এর বেশি কিছু নয়।’
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি ঝামেলা চলে আসছিল। এর জেরে রাতে দোকান ও অফিস ভাঙচুর করেছে। ওসি স্যারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার প্রতিবেদন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই অনুযায়ী তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ওখানে গুলির কোনো তথ্য আমরা পাইনি।’