বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসায় সুইডিশ বিনিয়োগ চান প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে অনুদান প্রদানের পরিবর্তে বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করতে সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) মহাপরিচালক জ্যাকব গ্রানিট সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা সুইডিশ কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আমি যা প্রচার করছি, তা হলো সামাজিক ব্যবসা, কারণ অনুদানের অর্থ হলো একটি দাতব্য সংস্থা।’ তিনি সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য স্বাস্থ্যসেবাকে একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে গুরুত্ব দেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট নিরসনে সুইডেনের সহায়তা কামনা করেন, যার বিপুল সম্পদ অব্যবহৃত এবং রপ্তানির জন্য প্রস্তুত।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা একটি জ্বালানি ক্ষুধার্ত দেশ। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নেপালের বিশাল সম্পদ রয়েছে এবং আমরা তা আনতে ইচ্ছুক। এজন্য সিডা আমাদের উভয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারে।’
সিডা বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের জন্য সুইডিশ সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করে। বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য সুইডেনের বর্তমান সহযোগিতা কৌশল ২০২১-২০২৫ সময়কালকে কভার করে।
সিডা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত বিভিন্ন কৌশল থেকে ২০২৪ সালে প্রায় এক বিলিয়ন এসইকে প্রদান করেছে। এটি ২০২৪ সালে মানবিক সহায়তা হিসাবে ১২৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন এসইকে প্রদান করেছে, যার বেশিরভাগই বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক ও কক্সবাজারের স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য।
সিডা মহাপরিচালক জ্যাকব গ্রানিট বলেন, তারা কীভাবে তাদের সহায়তাকে ‘পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে’ এবং বাংলাদেশের জন্য ‘সমালোচনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ কার্যকর করা যায়, তার উপায়গুলোর জন্য অপেক্ষা করছেন৷ তিনি বলেন, ‘আমরা কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন করতে পারি এবং আমাদের সঠিক ধরনের সমর্থন আছে, তা নিশ্চিত করতে পারি, তার উপায় খুঁজছি।’ সুইডিশ এই কর্মকর্তা সরকারের সংস্কার উদ্যোগ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
প্রধান উপদেষ্টা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আশা করেন, সুইডিশ সমর্থন দেশের রূপান্তরে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে, ‘আমাদের হাতে বেশি সময় নেই, তবে আমরা ভিত্তি স্থাপন করতে চাই।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, বিগত শাসনামলে বাংলাদেশে সবকিছু ভেঙে পড়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকার ‘টুকরো টুকরো’ পুনর্গঠনের জন্য কাজ করছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত উইকস রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সুইডিশ সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।