প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ আনন্দ মোহন কলেজ অধ্যক্ষের

এনটিভির ইউটিউব চ্যানেল ‘এনটিভি নিউজে’ ‘ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণ চান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহ।
প্রতিবাদলিপিতে অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সারা দেশে শিক্ষার্থী কর্তৃক জোরপূর্বক যেখানে অনেক কলেজে অধ্যক্ষদের চেয়ার পরিবর্তন হয়েছে, আনন্দ মোহন কলেজের ক্ষেত্রে গত ১৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ আনন্দ মোহন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল রাখার জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বিশাল সমাবেশ করেছে।’
অর্থের বিনিময়ে পদ পাওয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ পদের আবেদন করার পর সরকারি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে অন্যান্য আবেদনকারীর মতো আমার সম্পর্কেও প্রয়োজনীয় খোঁজ খবর নিয়ে কর্তৃপক্ষ আমাকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করেন।
এইচএসসির ফরম পূরণের ফি ফেরত ও পিকনিকের টাকার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ আসে। ওই সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন প্রফেসর নুরুল আফছার। তাঁর স্বাক্ষরেই টাকা উত্তোলিত হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়। এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পিকনিকের টাকা আদায় করা ও ফেরত দেওয়ার বিষয়টিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আফছারের সময়ে। দুটি ঘটনাই আমার অধ্যক্ষ পদে যোগদানের প্রায় দুই মাস আগের। এ বিষয়ে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ছাত্রনেতাদের প্রশংসা ও উপাধ্যক্ষের কক্ষে তালা মারার বিষয়ে বলেন, ইতিহাস বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের প্রতিভাকে প্রশংসা করা হয়েছে। আর অধ্যক্ষ হিসেবে উপাধ্যক্ষের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কোনো সুযোগ নেই। প্রকৃত সত্য হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমন্বয়করা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাধ্যক্ষের পূর্ববর্তী নানাবিধ ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের কারণে সংক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর কক্ষে তালা দেয়।
জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, সিনেটে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কোটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাকে মনোয়ন দেওয়া হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে সব অধ্যাপকদের ভোটে আমাকে সিনেট সদস্য নির্বাচিত করা হয়। যা আনন্দ মোহন কলেজের গৌরব বৃদ্ধি করেছে বলে আমি মনে করি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে তাঁর বক্তব্য খণ্ডিতভাবে এবং ধারাভাষ্য আকারে প্রচার করা হয়েছে দাবি করে অধ্যক্ষ বলেন, যাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে তাঁরা কেউই আমার অপসারণ চাননি। তা ছাড়া শতবর্ষী আনন্দ মোহন কলেজে প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী দুই শতাধিক শিক্ষক ও দুই শতাধিক কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত পরিবার। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীর মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। এই কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়নে আমরা সবাই সম্মিলিভাবে চেষ্টা করছি। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের জাতীয় পর্যায়ে আনন্দ মোহন কলেজ ২০২৪ সালে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে এবং সম্মাননাও পেয়েছে।