আ.লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি
আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার (১১ মে) রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘নাগরিক কোয়ালিশন সেমিনার’ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, দেরিতে হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে, একটা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করবে— এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য আমরা স্বাগত জানাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক কার্যকলাপ যাতে বন্ধ রাখা যায়, নিষিদ্ধ করা যায়, সে জন্য আরও একটি পদক্ষেপ সরকার নিতে যাচ্ছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। আমার মনে হয় এই সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে একটু সংশোধনী আনতে হবে। এটি করে, বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে। সেটিকেও আমরা স্বাগত জানিয়েছি।
শাহবাগে গণজমায়েতে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা শাহবাগে কেন যাবে? আমাদের দাবি তো আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দীর্ঘ কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে দিয়েছি, মৌখিকভাবে দিয়েছি, আমরা বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে বলেছি, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেছি। আমরা শাহবাগে গিয়ে বলতে হবে কেন?
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে এই দাবিটা প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে প্রদান করেছিলাম যে আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তখন প্রধান উপদেষ্টা যদি বিষয়টি আমলে নিতেন, তাহলে হয়তো আজকে, গতকাল বা তার আগের দিন এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে সরকারকে পড়তে হতো না।
তিনি আরও বলেন, তবে আমরা বলব, ভবিষ্যতেও যেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন এরকম বিভিন্ন বিষয়ে আমরা যে পরামর্শ দেই, আমাদের দলের যে বিভিন্ন রকম বক্তব্য থাকে, দেশের পক্ষে ও জনগণের পক্ষে, এই বিষয়গুলো যেন যথাসময়ে আমলে নেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা বলতে চাই, যেহেতু সারা বাংলাদেশের মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা যেন একটা রোডম্যাপ প্রদান করেন খুব শিগগিরই। না হলে হয়তো এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে পৃথিবী কি আর স্বীকৃতি দেয়? দেশের মানুষ কি স্বীকৃতি দেয়? আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি। আওয়ামী লীগ একটি মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ ও মাফিয়া তন্ত্রের চর্চা করেছে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে। তাদের অত্যাচার, নিপীড়ন, গণহত্যার মধ্য দিয়ে তাদের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইজ নো মোর পলিটিক্যাল পার্টি। আওয়ামী লীগ একটা মাফিয়া পার্টি, এটা একটা ফ্যাসিবাদী দল। সুতরাং রাজনৈতিক তকমা দিতে চাই না। আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের চর্চা নাই।