লালমনিরহাটে লিচুর সরবরাহ কম, দাম তুলনামূলক বেশি

মধুমাস শুরুতেই লালমনিরহাটের বাজারগুলোতে লিচু আসা শুরু করেছে। তবে লিচুর সরবরাহ কম থাকায় দাম এখন বেশিই বেশি রয়েছে। এই সময় আম, কাঁঠালসহ নানা রসালো ফলের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে, ফল উৎপাদন ও বিক্রির মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে ভালো সাড়া পড়ার আশা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এখন স্থানীয় জাতের লিচু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বোম্বাই জাতের লিচুও বাজারে আসবে। চায়না-৩, বোম্বাই ও মাদ্রাজ জাতের লিচু এ অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। অনেক কৃষক এই জাতের লিচু চাষ করে ভালো লাভ করছেন।
শহরের বিডিআর গেট, মিশন মোড়, পৌরবাজার, গোশালা বাজার, চাঁদনী বাজার, হাড়িভাঙ্গা, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও কোর্ট বাজার এলাকায় অস্থায়ী লিচু বিক্রির দোকান বসেছে। এসব দোকানে ভালো মানের লিচু পাওয়া যাচ্ছে। এখন প্রতি ১০০টি লিচু ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি, সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।
জেলা সদরের চাষি আজিজ আলী জানান, তার এক বিঘা জমির ২০টি লিচু গাছে প্রচুর লিচু হয়েছে। পাঁচ বছর বয়সী একটি গাছ থেকে বছরে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি লিচু পাওয়া যায়, যা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার লিচুর সমান।
অন্য কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, এ বছর আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য ভালো ছিল। তাই তারা ভালো ফলনের আশা করছেন।
লিচু চাষি মনসুর রহমান জানান, প্রতি বছর তার বাগান থেকে ভালো লাভ হয়, যা তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাকে মজবুত করে।
লিচু ব্যবসায়ী হবিব আলী বলেন, তিনি আট বছর ধরে লিচু ব্যবসায় আছেন এবং লাভজনক হওয়ায় জমি বাড়াচ্ছেন।
আকবর আলী জানান, তিনি এবার ৫০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে চায়না-৩, বোম্বাই ও মাদ্রাজ জাতের লিচু চাষ করছেন। প্রতিদিন পাঁচজন শ্রমিক বাগানের কাজ করছেন। ঢাকার ব্যবসায়ীরাও এখন লিচু কেনা শুরু করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, এ বছর জেলায় ২৪৪ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। বসতবাড়িতেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিচু চাষ বেড়েছে। লালমনিরহাটে আম ও লিচুর বাণিজ্যিক চাষ দ্রুত বাড়ছে, যা জেলার কৃষি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।