২১ পদের ১৭টিই শূন্য, শিক্ষক সংকটে দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে চরম শিক্ষক সংকট। ২১টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ১৭টি পদই শূন্য। বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন মাত্র চারজন শিক্ষক, যার মধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। এতে পিছিয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬৫৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করছে। অথচ এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে পাঠদানের দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র চারজন শিক্ষক। বিজ্ঞান, ইংরেজি ও ধর্মীয় বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের ঘাটতিতে ভুগছে এবং পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল করতে পারছে না।
এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘পদার্থ, জীববিজ্ঞান, রসায়নের মতো কঠিন বিষয়গুলোতে শিক্ষক না থাকায় আমরা ভালো নাম্বার তুলতে পারছি না।’
আরেক শিক্ষার্থী সজাগ চাকমা বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষক সংকটে ব্যবহারিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অর্ণব চৌধুরী বলেন, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় পরীক্ষায় সঠিকভাবে উত্তর লেখা সম্ভব হয় না।
দীঘি চাকমা বলেন, ‘কম্পিউটার ও বিজ্ঞান ল্যাব থাকলেও শিক্ষক না থাকায় ব্যবহার করতে পারছি না, ফলে পিছিয়ে পড়ছি প্রযুক্তিগত শিক্ষায়।’
সহকারী শিক্ষক সুমন কুমার প্রামাণিক বলেন, ‘আমি কৃষি বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ড থাকায় গণিত ও বিজ্ঞান ক্লাস নিতে হয়।’
সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ আবদুল আলম বলেন, ‘আমি সমাজবিজ্ঞানে নিয়োগ পেয়েছি, কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে বিজ্ঞান ও গণিত পড়াতে হচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপ চন্দ্র দাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট চলছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ১৭টি পদ শূন্য। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পাঁচটি পদের মধ্যে তিনটি খালি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত কুমার সাহা বলেন, ‘কয়েক মাস আগে শিক্ষক ছিলেন আটজন, গত মাসে চারজন বদলি হওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এতে শ্রেণিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। দ্রুত যেন নিয়োগ দেওয়া হয়।’