ফটিকছড়ির অভয়ারণ্যে ৩৩ অজগর ছানা অবমুক্ত

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হাজারীখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে বার্মিজ রক পাইথন প্রজাতির ৩৩টি ছানা অবমুক্ত করা হয়েছে। যদিও এগুলো বিষধর সাপ নয় তবুও এসব লোকালয়ের কাছাকাছি অবমুক্ত করায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে উপজেলার হারুয়ালছড়িতে এই অজগর সাপের ছানাগুলো অবমুক্ত করেন ফটিকছড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের হাজারীখিল রেঞ্জ কর্মকর্তা শিকদার আতিকুর রহমান এবং চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. শাহাদাত হোসেন শুভ।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ইনকিউবেটরে জন্ম নেওয়া এসব অজগর ছানা অভয়ারণ্যের কাছাকাছি এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বন বিভাগের অফিস থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে এই অবমুক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, অবমুক্ত করা এলাকাটির পাশেই রয়েছে তিনটি চা বাগান, দুটি খাল এবং ঘনবসতির বসতবাড়ি। চা-শ্রমিকরা তাদের ছোট শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক মুহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘শ্রমিকরা এখন তাদের সন্তানদের রেখে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছে। কিছুদিন পর দেখবেন, এসব সাপ গরু-ছাগল খেয়ে ফেলছে। এখন তো শুধু অজগর ছানা ছাড়ল, বন্যহাতিও ছাড়া যায় কি না চিন্তা করেন!’
এনজিও কর্মকর্তা তাসকিন আহমেদ রুবেল বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে অজগরের ছানাগুলো পানির মাধ্যমে লোকালয়ে চলে আসতে পারে। গহীন জঙ্গলে অবমুক্ত করলে সমস্যা হতো না। আমরা আতঙ্কে আছি।’
হাজারীখিল রেঞ্জ কর্মকর্তা শিকদার আতিকুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি অভয়ারণ্য। এখানে সব ধরনের বন্যপ্রাণী থাকবে। মানুষ আতঙ্কিত হলেও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এটি প্রয়োজন। আমরা নিরাপদ স্থানেই অর্থাৎ রেঞ্জ অফিসের ৫০০ মিটার দূরে ছানাগুলো অবমুক্ত করেছি।’
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘এই ছানাগুলো বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়ার উপযোগী হয়েছে। তাই সংরক্ষণের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অজগর ছানাগুলোকে বন বিভাগের নির্দেশনায় নিরাপদ ও পরিবেশ উপযোগী জায়গায় অবমুক্ত করা হয়েছে।’