স্ত্রীসহ বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের বিরুদ্ধে ২ মামলা

জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান ও তার স্ত্রী তাহমিদা বেগমের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুদকের উপপরিচালক মো. তানজির হাসিব সরকার বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। দুপুরে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
আক্তার হোসেন বলেন, শেখ আব্দুল হান্নানের কাতার, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সম্পদ অর্জন এবং কানাডায় তার পোষ্যদের নামে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে, দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শেখ আব্দুল হান্নান জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে তিন কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৫০৬ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন। একই সময়ে তিনি নিজের নামে ছয়টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৭ কোটি ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭০১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
মামলা এজাহারে বলা হয়, শেখ আবদুল হান্নান অপরাধলব্ধ এই অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে।
অন্যদিকে, শেখ আবদুল হান্নানের স্ত্রী তাহমিদা বেগম স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে এক কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ৩০৪ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া তিনি নিজ নামে থাকা ৩২টি ব্যাংক হিসাবে এক কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজার ১২৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এই অভিযোগে তাহমিদা বেগম ও তার স্বামী শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় পৃথক একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত শেখ আব্দুল হান্নান, তাহমিদা বেগম ও তাদের পরিবারের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশে তাদের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ এবং ঢাকার অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও জমি জব্দ করা হয়। এসব পদক্ষেপের ফলে তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে এসেছে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।