পুলিশের গায়ে হাত দিলে ছাড় দেওয়া হবে না : ডিআইজি
পুলিশের গায়ে হাত দিলে জড়িতদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়া। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ময়মনসিংহে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে পুলিশের ওপর দুটি পৃথক হামলার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, সমাজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের সঙ্গে পূর্ণ মনোবল নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার মধ্যদিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে যারা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা অভিযুক্ত। তাদের আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে। এসব ঘটনায় পুলিশের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে। পুলিশের গায়ে হাত দিলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ২২ আগস্ট ময়মনসিংহ নগরীর কৃষ্টপুর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্য।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় দুটি পরিবারের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। এতে এক ব্যক্তিকে থানায় আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় অভিযোগকারী ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে আসার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ অভিযোগকারীকে আহত করা হয়। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৭ জন। অভিযুক্ত বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে গত ২৫ আগস্ট ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা বাজার এলাকায় মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিবাদী পক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহীদুল ইসলাম। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামিরা হলেন হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ (৫৫) এবং তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৬)।
কিন্তু এই ঘটনাটিকে আড়াল করতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হালুয়াঘাট পুলিশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাগর সরকার। তিনি জানান, স্থানীয় আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে আব্দুর রশিদ এবং তার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে বিবাদী করে আদালতে একটি সিআর মামলা করে। গত ২৫ আগস্ট ওই মামলার তদন্তে যায় এসআই মো. শহীদুল ইসলাম। এ সময় বিবাদী আব্দুর রশিদ এবং তার স্ত্রী জাহানারা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের সামনেই বাদী পক্ষকে গালমন্দ শুরু করেন। তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শহীদুল ইসলাম প্রতিবাদ করলে বিবাদী আব্দুর রশিদ, তার স্ত্রী জাহানারা বেগম এবং তাদের লোকজন তার ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এ ঘটনার খবরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আব্দুর রশিদকে আটক করা হয়। এরপর তার স্ত্রী জাহানারা বেগম স্বামীকে ছাড়াতে থানায় এলে তাকেও আটক করা হয়। পরে ওই দিন রাতেই সরকারি কাজে বাধা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এসআই শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মো, সাগর সরকার বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা আড়াল করতে আসামি পক্ষের লোকজন প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তবে পুলিশ আইনের দৃষ্টিতেই কাজ করছে। সরকারি কাজে বাধা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ