মিরপুরে নিহতদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে : ফায়ার সার্ভিস
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়িতে একটি তৈরি পোশাক কারখানা ও একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর গার্মেন্টস ভবন থেকে ১৬টি অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে খালি চোখে সেগুলোর কোনোটিরই পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গার্মেন্টসটির ছাদ টিনশেড ছিল। ছাদ ও গেট তালা মারা থাকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় লোকজন আটকে পড়ে। মৃতদেহগুলো সেই দুই তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, প্রচণ্ড তাপে তাদের মুখ সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, তাই পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হচ্ছে না। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।
রাসায়নিক বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তারা অচেতন হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান বলে জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের এই পরিচালক বলেন, কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আরও সময় লাগবে। কেমিক্যাল গোডাউনে ছয়-সাত ধরনের কেমিক্যাল ছিল। সাধারণত আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত ছড়িয়েছে, তাই গার্মেন্টস অংশে থাকা কর্মীরা বাইরে বের হতে পারেনি।
ফায়ার সার্ভিসের এই পরিচালক আরও বলেন, গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনের কোনো লাইসেন্স ও অনুমোদন ছিল না। এখানে কতজন কাজ করত সেই হিসাবও পাওয়া যায়নি।
এর আগে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুনের খবর আসে। খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রথমে পাঁচ ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে আরও সাত ইউনিট যোগ দেয় আগুন নিয়ন্ত্রণে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করে পোশাক কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশে থাকা রাসায়নিকের গোডাউনেও। খবর পেয়ে একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। এরপর তাদের সঙ্গে সহায়তায় যোগ দেন পাশে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি।

ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)