বিজিবির গুলিতে সিলেট সীমান্তে যুবক নিহত

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) চোরাচালান প্রতিরোধ অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলমাস মিয়া (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বিজিবি নিহতকে চোরাকারবারিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করলেও, নিহতের পরিবার বলছে আলমাস ছিলেন একজন নিরীহ কৃষক। নিহত যুবক চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে।
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের চতুল-লালাখাল সড়কে আলমাস গুলিবিদ্ধ হন। এর আগে ওই এলাকায় চোরাই ভারতীয় পণ্যবাহী একটি পিকআপ আটকের চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যদের ওপর চোরাকারবারিরা হামলা চালায়। এই হামলায় এক বিজিবি সদস্য গুরুতর আহত হন। এসময় বিজিবি সদস্যরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন।
বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল জুবায়ের আনোয়ারের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হামলা ও বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও, গুলিতে মৃত্যুর বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জুবায়ের উল্লেখ করেন, ‘অভিযান চলাকালে টহলদল একটি অবৈধ পণ্যবাহী পিকআপ আটক করলে সশস্ত্র চোরাকারবারী দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে টহলদলের ওপর হামলা চালায়। আটক হওয়া মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় টহলদলের সদস্যরা নিরুপায় হয়ে চার থেকে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীদের আক্রমণে একজন বিজিবি সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সুইরঘাট বিওপির চারজন বিজিবি সদস্য দুটি মোটরসাইকেলযোগে টহল দেওয়ার সময় সুপারি বহনকারী একটি পিকআপকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে পিকআপের পেছন থেকে গুলি ছোড়েন বিজিবির সদস্যরা। এতে পিকআপের ওপরে থাকা শ্রমিক আলমাস গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা বিজিবিকে ঘেরাও করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধার করে।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে পিকআপ ভ্যানের একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। চোরাকারবারি সন্দেহে বিজিবি সদস্যরা গুলি করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।