সালমান শাহর শাশুড়ি লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রাজধানীর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় সালমান শাহর প্রাক্তন স্ত্রী সামিরার মা লতিফা হক লিও ওরফে লুসি (৭১)-কে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার মামলার তদন্তকর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল আলম খন্দকার দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর পর রমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। তবে, গত ২০ অক্টোবর ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক বাদীপক্ষের করা রিভিশন মঞ্জুর করে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন সালমান শাহর মামা মোহাম্মদ আলমগীর। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সামিরা ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন- শিল্পপতি ও সাবেক চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, খলনায়ক আশরাফুল হক ডন, ডেবিড, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ (১৭)। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে মোহাম্মদ আলমগীর উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার বোন নিলুফার জামান চৌধুরী (নীলা চৌধুরী), বোনের স্বামী কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী এবং তাদের ছোট ছেলে শাহরান শাহ নিউ ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, সালমান ঘুমাচ্ছেন।
কিছুক্ষণ পর প্রডাকশন ম্যানেজার সেলিম ফোন করে জানান, সালমানের কিছু হয়েছে। দ্রুত তারা বাসায় ফিরে দেখেন শয়নকক্ষে সালমানের নিথর দেহ পড়ে আছে এবং কয়েকজন বহিরাগত নারী তার হাত-পায়ে তেল মালিশ করছেন। পাশের কক্ষে সামিরার আত্মীয় রুবি বসে ছিলেন। সালমানের মা চিৎকার করে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পথে তারা সালমানের গলায় দড়ির দাগ এবং মুখমণ্ডল ও পায়ে নীল দাগ দেখতে পান। পরে তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সালমান শাহ অনেক আগেই মারা গেছেন।
মোহাম্মদ আলমগীর আরও উল্লেখ করেন, সালমানের বাবা কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী মৃত্যুর আগে ছেলের মৃত্যুকে হত্যা বলে সন্দেহ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন। এতে তিনি রমনা থানার অপমৃত্যু মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ এবং সিআইডি’র মাধ্যমে তদন্তের আবেদন জানান।
সালমান শাহর বাবার মৃত্যুর পর মোহাম্মদ আলমগীর তার বোনের পক্ষ থেকে মামলাটি পরিচালনা করছেন। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে তারা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে, এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে সালমান শাহকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদক