সাভারে ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ সদস্য আটক
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নগদ ৬৫ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় সাভারে ডিবি পুলিশের দুজনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। আটক গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা হলেন হেলাল উদ্দিন, শরিয়ত উল্লাহ শাওন এবং র্যাব সদস্য ফরিদ, মিজান ও মুকিদুল। তারা র্যাব ১০ সিপিসি ২ এ কর্মরত। এ ছাড়াও এ ঘটনায় মাইক্রোবাস চালক কবির হোসেনকে আটক ও ডাকাতির ঘটনায় ব্যাবহৃত মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনো অভিযান চলছে। অভিযান শেষ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে।
সূত্র জানায়, গত ৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার রানিখাল ইউনিয়নের তিন দোকান বাজারের অদূরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আকাশ অসীমের কাছ থেকে আটকরা নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে স্বর্ণ বিক্রির নগদ ৬৫ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা করা হলে তদন্তের ভার দেওয়া হয় উপ-পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেনকে। পাশাপাশি ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। তদন্তের শুরুতেই মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের অন্তত ৫০টি পয়েন্টের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে গোয়েন্দা পুলিশ। শনাক্ত করা হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস। শনিবার দিনভর সাভারে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় মাইক্রোবাসের চালক কবির হোসেনকে। জব্দ করা হয় মাইক্রোবাসটি। তদন্তের সূচনাতেই বেরিয়ে আসে কেঁচো খুঁড়তে সাপ। একে একে আটক করা হয় ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্য ও র্যাবের ৩ সদস্যকে। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে তাদের রাখা হয় মুন্সীগঞ্জের পদ্মা উত্তর থানায়।
আটকদের মধ্যে র্যাবে কর্মরত ২ সেনা সদস্য ও একজন ছিলেন পুলিশ সদস্য। পরে বিষয়টি সেনা কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা ফরিদ ও মিজানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়।
নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটায় অভিযানে যাবার কথা বলে ঢাকা জেলা উত্তর ডিবির সদস্য হেলাল উদ্দিন ও শরিয়ত উল্লাহ শাওন মাইক্রোবাসটি ভাড়া করেন।
নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক সাভার মাইক্রোবাস মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে তারা মাইক্রোবাস ভাড়া নিতেন। এ ঘটনা প্রকাশ পাবার পর অন্যান্য চালকদের সঙ্গে আমরা কথা বলে জানতে পারি এর আগেও তারা এভাবে মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে ‘ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি’ করতেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক বিশ্লেষণ করে তারা এই চক্রটির সন্ধান পেয়েছেন। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জড়িত থাকায় বিব্রত পুলিশ প্রশাসন।
আটকদের মামলার আসামি দেখিয়ে আদালতের তোলা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

জাহিদুর রহমান