আইনজীবীদের কটূক্তির অভিযোগে বিএনপিনেতার বিরুদ্ধে দুই মামলা
আইনজীবীদের নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশালের সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের বিরুদ্ধে ঢাকার পৃথক দুই আদালতে মানহানির মামলা করা হয়েছে।
আজ রোববার (৮ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির (ঢাকা বার) কার্যনির্বাহী কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব হাসান (রানা)। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি আমলে গ্রহণ করে আসামিকে হাজিরের জন্য সমন ইস্যু করেন।
এছাড়া ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অ্যাডভোকেট এ,টি,এম আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভিক্টরি চাকমা মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন।
আরজি থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ জন্মের শুরু থেকেই এদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে আইনজীবীরা প্রধান ভূমিকা রাখছেন। যে কোনো রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে আইনজীবী সমাজ জনগণের সঙ্গে একাত্ত হয়ে মোকাবিলা করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেও সবসময় আইনজীবীদের উল্লেখযোগ্য আসন ছিল। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদেও স্বনামধন্য আইনজীবী তাহাদের সুচিন্তিত কর্মের মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাছাড়া এদেশের আইনজীবীরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়া আইনজীবীরা আইনপেশার মতো মহান ও মানবসেবাধর্মী পেশায় সম্পৃক্ত থেকে দেশ ও জনগণকে নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে আসছেন।
আরজিতে আরও বলা হয়, আসামি আইনজীবীদের অর্জন ভূলুণ্ঠিত করার নিমিত্তে এবং আইনজীবীদের হেয় প্রতিপন্ন করতে গত ৫ নভেম্বর বিকেল ৪টায় বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুর ইউনিয়নের এক জনসমাবেশে বাংলাদেশে আইনপেশায় নিয়োজিত আইনজীবীদের নিয়ে কুটুক্তি করে বলেন, ওকালতি যারা করে, তারা কিন্তু টাউট-বাটপার হয়।
আসামির এমন কটূক্তি বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজের জন্য মানহানিকর। বিবাদির এমন উক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আইনজীবীদের দেশ ও জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার ইচ্ছায় বিবাদী ইচ্ছাকৃতভাবে কটূক্তি করেছেন।
বিবাদী একজন সাবেক আইনপ্রণেতা অর্থাৎ সংসদ সদস্য হয়েও এমন উক্তি করেছেন। যা বাদী বিভিন্ন পত্রিকা মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারেন। আসামির এমন কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে চরমভাবে অপমানিত হন। বাদী মানসিকভাবে চরম আহত হন। আসামির এমন বক্তব্যে আইনজীবী সমাজের সুনাম চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়।
আসামির বক্তব্যে বাদী তার পেশাগত জীবনে চরমভাবে অপমানিত হন। তার মোয়াক্কেলসহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে মানহানি ঘটে। যার পরিমাণ আর্থিক মানদণ্ডে ১০০ কোটি টাকার অধিক।
উল্লেখ্য, আসামির এমন বক্তব্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন বারসমূহ প্রতিবাদ লিপি ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন। একজন স্বনামধন্য আইনজীবী হিসেবে বাদী মনে করেন উল্লিখিত আসামির এমন কটূক্তির আইনসম্মত বিচার না হলে আইনজীবীদের অবস্থান দেশবাসীর কাছে চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত হবে। আর বাদী নিজেও নিজের কাছে ছোট হয়ে থাকবেন। বিধায় বাদী উক্ত আসামির বিরুদ্ধে বাদীসহ সমগ্র আইনজীবী সমাজের মানহানি করার অপরাধে মামলা আনয়ন করেন।
বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

আদালত প্রতিবেদক