মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে রাষ্ট্রের কোনো তৎপরতা নেই : রিজভী
মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে রাষ্ট্রের কোনো তৎপরতা নেই জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সারাদেশে অনেক মানুষ দুর্ভোগে, এসব দুর্ভোগ লাঘবে রাষ্ট্রের কোনো তৎপরতা নেই। স্বাধীনতার পর থেকেই সেবামূলক কাজে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমন দেখা যায়নি। গণভোট ও পিআরসহ নানা দাবি না তুলে রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রের উচিত মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা।’
রাজধানীর শ্যামলীতে আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে অসুস্থ বেতার শিল্পী আফরোজা নিজামীকে আর্থিক সহযোগিতা অনুষ্ঠান শেষে এ প্রশ্ন করেন তিনি। এ সময় আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, ‘গোঁজামিল দিয়ে কোনো কিছু করা হলেও তা টেকসই হবে না। ৯০ ভাগ মানুষ যদি বুঝতে না পারে গণভোটের উদ্দেশ্য কী তাহলে সেই তিমিরে মানুষ থেকে যাবে।’সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে- সেই আলোকে গণভোটের প্রশ্নমালা করার পরামর্শ দেন রিজভী আহমেদ।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘গণভোটে যে চারটা প্রশ্ন রয়েছে সেখানে ‘না’এর অপশন নেই। একমত হতে না পারলে সেই মতামত কীভাবে দেবে জনগণ, তা উল্লেখ নেই গণভোটে।’
রিজভী আরও বলেন,
বিএনপি জুলাই সনদের পক্ষে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘কিন্তু জুলাই সনদ জাতির সামনে উপস্থাপন ঠিক মতো হয়নি। আরও স্পষ্ট করে উপস্থাপন করা দরকার ছিল। ভারত থেকে বিপুল অর্থে দেশে নাশকতা তৈরির চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। তারা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। শেখ হাসিনার বিচারের বিষয় আদালতের, মানুষ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চায়।’
দেশকে ক্রমান্বয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, পতিত স্বৈরাচার পাশের দেশে বসে নানা ষড়যন্ত্র করছে। ঢাকা-গাজীপুরসহ নানা জায়গায় গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে নানা সহিংসতা করছে তারা। এই সংস্কৃতি আওয়ামী সংস্কৃতি। সরকার প্রথম থেকে ফ্যাসিবাদের বিষদাঁত ভেঙে ফেললে এখন এটা হতো না।’
যে চার বিষয়ে গণভোট—
ক. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক